অনলাইন ডেস্ক: মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর বর্বর নির্যাতনের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ। বুধবার বিকালে ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত মিউ মিন্ট থানকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে এ প্রতিবাদ জানানো হয়। এসময় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতের হাতে একটি প্রতিবাদ পত্রও তুলে দেয়া হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (দ্বিপক্ষীয় বিষয়াবলী) কামরুল হাসান জানান, রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতের কাছে আমাদের উদ্বেগের কথা বলেছি। অবিলম্বে সেখানকার নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে দেশটিকে অনুরোধ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সেখানকার লোকজনের দেশে ফিরে যাওয়ার পথ নিশ্চিত করতে আমরা তাদের পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে বলেছি।
জবাবে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত গণমাধ্যমে প্রকাশিত এসব সংবাদকে বানোয়াট বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, প্রকৃত অর্থে সেখানে এমন কিছুই হচ্ছে না।
পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রাখাইনে মানবিক পরিস্থিতির কারণে মিয়ানমারের মানুষজন নিরাপত্তা ও আশ্রয়ের জন্য মরিয়া হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। বাংলাদেশমুখী জনস্রোত প্রতিরোধ করতে সীমান্তরক্ষী বাহিনী আন্তরিক প্রচেষ্টা চালালেও নারী, শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠসহ মিয়ানমারের হাজার হাজার মানুষ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আসছে। বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের জন্য সীমান্তের ওপর পাড়ে আরো হাজারো মানুষ জড়ো হয়েছে বলে খবর আসছে।
রাখাইন প্রদেশ থেকে সীমান্ত অভিমুখী জনস্রোত সামাল দিতে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে মিয়ানমারকে অনুরোধ জানান কামরুল আহসান। রাখাইনের ঘটনাবলীর সাথে বাংলাদেশকে জড়ানোর মিয়ানমার মিডিয়ার প্রবণতার প্রতিবাদ জানান তিনি।
রাখাইন প্রদেশে সামরিক অভিযানের সময় শক্তির যথেচ্ছ ব্যবহার ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপারে নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দাবি বিবেচনায় নিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানান কামরুল আহসান। তিনি কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই আইনের শাসন ও যথাযথ বিচার প্রক্রিয়া চালানো ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
রাখাইনের সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়কে যাতে সীমান্তের ওপর পাড়ে আশ্রয় নেয়ার জন্য বাধ্য করা না হয় – সেজন্য যথাযথ পদক্ষেপ জরুরিভিত্তিতে নিতে রাষ্ট্রদূতের প্রতি অনুরোধ জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব। সীমান্ত পাড় হয়ে যারা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বা প্রবেশের অপেক্ষায় আছে, তারা ভয়ভীতি ছাড়া নিরাপদে ও সম্মানের সাথে যাতে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারে, তার জন্য রাখাইনে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান কামরুল আহসান।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, গত মাস থেকে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংস হামলা চালাচ্ছে। সেখানে গণমাধ্যমকর্মীসহ আন্তর্জাতিক ত্রাণকর্মীদের ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। এ হামলা অব্যাহত থাকায় আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বাড়ছে।
Comments
comments