অনলাইন ডেস্ক: দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের নতুন নেতৃত্ব বেছে নিয়েছে ব্যবসায়ীরা। নির্বাচনে পরিচালক পদে সম্মিলিত গণতান্ত্রিক পরিষদ নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে।
রবিবার রাতে ঢাকার আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) ভোটগণনা শেষে অনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা করা হয়। প্রকাশিত ফলাফলে পরিচালক পদে ‘সম্মিলিত গণতান্ত্রিক পরিষদ’ ১৬টিতে জয়ী হয়। অন্যদিকে ‘ব্যবসায়িক ঐক্য ফোরাম’ জয়লাভ করে দুটিতে।
নির্বাচন বোর্ডের প্রধান করা হয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক আলী আশরাফকে। আর নির্বাচনে আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) প্রাক্তন সভাপতি জাহাঙ্গীর আল আমিন।
সকাল নয়টা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত সম্মেলন কেন্দ্রের সেলিব্রেটি হলে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে মোট এক হাজার ৮৯৮ জন ভোটারের মধ্যে ১ হাজার ৬৬৮ জন ভোট দেয় বলে জানা গেছে।
এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন পোশাক ব্যবসায়ী সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন ‘ব্যবসায়ী ঐক্য ফোরাম’ এবং বায়িং হাউজ এসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী ইফতেখার হোসেন বাবুলর ‘ব্যবসায়ী ঐক্য ফোরাম’। বাবলু ব্যবসায়ী ঐক্য ফোরামের প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন।
এফবিসিসিআইয়ের ৬০টি পরিচালক পদের মধ্যে চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে ১২ জন করে মোট ২৪ জন পরিচালক পরোক্ষভাবে মনোনীত হন। বাকি ৩৬টি পদে সরাসরি নির্বাচনের নিয়ম রয়েছে সংগঠনের গঠনতন্ত্রে। এর মধ্যে চেম্বার গ্রুপে ১৮টি ও অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপের ১৮টি পদ রয়েছে।
কিন্তু এবার সম্মিলিত গণতান্ত্রিক পরিষদ থেকে চেম্বার গ্রুপের সব প্রার্থী ভোট থেকে সরে যাওয়ায় সম্মিলিত গণতান্ত্রিক পরিষদের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। ফলে আজ ভোট হয়েছে কেবল অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপের ১৮টি পদে, যাতে উভয় গ্রুপ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।
নির্বাচনে এই ১৮টি পদের জন্য দুটি প্যানেলের ব্যানারে ৩৬ প্রার্থী লড়াই করেন। সম্মিলিত গণতান্ত্রিক পরিষদ থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়া ১৮ জনের মধ্যে ১১ জনই বর্তমান মেয়াদের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১ হাজার ২০৬টি ভোট পেয়েছেন খন্দকার রুহুল আমিন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আবু মোতালেব পেয়েছেন ১ হাজার ১৯৫ ভোট। তৃতীয় স্থানে থাকা নাজিম উদ্দিন পেয়েছেন ১ হাজার ১৪৫ ভোট। ১ হাজার ১৪১ ভোট পেয়ে চতুর্থ স্থান অধিকার করেছেন শফিকুল ইসলাম ভরসা। পঞ্চম স্থানে থাকা মুনতাকিম আশরাফ পেয়েছেন ১ হাজার ১০৫ ভোট। আর ১ হাজার ৭৭ ভোট পেয়ে ষষ্ঠ স্থান দখল করেছেন শমী কায়সার।
এ ছাড়া নির্বাচিতদের মধ্যে রয়েছেন—রাশেদুল হোসাইন চৌধুরী রনি (১০৫২), হাবিব উল্লা ডন (১০৩৪), সাফকাত হায়দার (১০১৭), ড. কাজী এরতেজা হাসান (১০০১), হেলেনা জাহাঙ্গীর (৯৮৪), আমজাদ হোসাইন (৯৭৭), নিজামুদ্দিন রাজেশ (৯৭৬), হাফেজ হারুন (৯৭৪), এস এম জাহাঙ্গীর হোসাইন (৯৬৫), আবুল আয়েছ খান (৯৬২), আবু নাছের (৯২৮) এবং খন্দকার মঈনুর রহমান জুয়েল (৯২৩)।
এদের মধ্যে ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব স্মল অ্যান্ড কটেজ ইন্ডাস্ট্রিজ অব বাংলাদেশের (নাসিব) হেলেনা জাহাঙ্গীর এবং ল্যান্ড ডেভেলপারস অ্যাসোসিয়েশনের ড. কাজী এরতেজা হাসান ব্যবসায়ী ঐক্য ফোরামের ব্যানারে নির্বাচন করে জয়লাভ করেন।
চেম্বার গ্রুপ থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতরা : বাগেরহাট চেম্বারের হাসিনা নেওয়াজ, বরিশাল চেম্বারের মো. নিজাম উদ্দিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বারের আজিজুল হক, চুয়াডাঙ্গা চেম্বারের দীলিপ কুমার আগারওয়ালা, কুমিল্লা চেম্বারের মাসুদ পারভেজ খান ইমরান, ফেনী চেম্বারের এ কে এন শাহেদ রেজা, গাজীপুর চেম্বারের মো. আনোয়ার শাদাত সরকার, গোপালগঞ্জ চেম্বারের শেখ ফজলে ফাহিম, জামালপুর চেম্বারের মো. রেজাউল করিম রঞ্জু, কিশোরগঞ্জ চেম্বারের গাজী গোলাম আশরিয়া, লালমনিরহাট চেম্বারের শেখ আবদুল হামিদ, মানিকগঞ্জ চেম্বারের তাবারুকুল তোদাদ্দেক হোসেন খান টিটু, মুন্সীগঞ্জ চেম্বারের মো. কহিনূর ইসলাম, নরসিংদী চেম্বারের প্রবীর কুমার সাহা, নোয়াখালী চেম্বারের আতাউর রহমান ভুঁইয়া, রাঙামাটি চেম্বারের মো. বজলুল রহমান, সুনামগঞ্জ চেম্বারের খায়রুল হুদা চপল টাংগাইল চেম্বারের আবুল কাশেম আহমেদ।
আগামী ১৬ মে পরিচালকদের ভোটে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি, প্রথম সহসভাপতি ও সহসভাপতি নির্বাচিত হবেন। ১৭ মে পরিচালক পদের বিপরীতে আপিল করা যাবে। আর ২০ মে ঘোষণা করা হবে চূড়ান্ত ফলাফল।
Comments
comments