Download Free BIGtheme.net
Home / জাতীয় / নাসিরপুর জঙ্গি আস্তানায় ৭/৮টি ছিন্নভিন্ন লাশ

নাসিরপুর জঙ্গি আস্তানায় ৭/৮টি ছিন্নভিন্ন লাশ

অনলাইন ডেস্ক: মৌলভীবাজারের নাসিরপুরের জঙ্গি আস্তানায় ৭/৮টি মৃতদেহের বিভিন্ন অংশ পড়ে আছে। মৃতদেহগুলো ছিন্নভিন্ন হয়ে ঘরের ভেতর ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এসব মৃতদেহ থেকে দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। তারা গ্রেনেড বিস্ফোরণের মাধ্যমে বুধবার বিকালের দিকে সুইসাইড করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গতকাল (৩০ মার্চ) বৃহস্পতিবার মৌলভীবাজারের নাসিরপুর গ্রামের জঙ্গি আস্তানায় অভিযান শেষে ঘটনাস্থলে বিকাল ৫টায় থাকা সাংবাদিকদের সাথে প্রেসব্রিফিং-এ তথ্য জানান কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।

মনিরুল ইসলাম আরো জানান, লাশগুলোর আকৃতি এতটাই বীভৎস যে কোনটি নারী, পুরুষ এবং অপরিনত বয়সের লাশ তা শনাক্ত করা যাচ্ছে না। ফরেনসিক টেস্টের আগে কতো জন নারী, পুরুষ বা শিশুর লাশ ছিল তা বলা যাবে না। তিনি সীতাকুণ্ড ও সিলেটের জঙ্গি আস্তানায় জঙ্গিদের ব্যবহৃত বিস্ফোরকের সাথে নাসিরপুরে ব্যবহৃত বিস্ফোরকের মিল আছে বলে জানান।

মৌলভীবাজার জেলা শহরের অপর জঙ্গি আস্তানা বড়হাটের অভিযান সম্পর্কে মনিরুল ইসলাম বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আজ (৩১ মার্চ) শুক্রবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে অভিযান পরিচালনা করা হবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি নিহতদের জেএমবির নব্য সদস্য বলে জানান। তিনি আরো জানান, গতকাল বুধবার অভিযান পরিচালনার আগে অভিযান পরিচালনাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের আহবান জানালে জঙ্গিদের পক্ষ থেকে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনার সাথে জুয়েলের সম্পৃক্ততা আছে কি না এ সম্পর্কে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে মনিরুল ইসলাম জানান, জুয়েলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ততা আছে কি না তা আরো তদন্তের মাধ্যমে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

নাসিরপুরের নিকটবর্তী মৌলভীবাজার সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রেসবিফিংকালে উপস্থিত ছিলেন সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি কামরুল আহসান, মৌলভীবাজার জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহজালাল প্রমুখ।

বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে বারোটা থেকে দ্বিতীয় দফায় মৌলভীবাজারের নাসিরপুর গ্রামের জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালায় কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও পুলিশের বিশেষ বাহিনী সোয়াত। প্রায় ৫ ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধ এ অভিযান চলে।

লন্ডনপ্রবাসী সাইফুর রহমানের জেলা শহরের বাসাটি এখনও ঘিরে রয়েছে পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। আজ (৩১ মার্চ) রাতে আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে পুলিশের বিশেষ বাহিনী সোয়াত অভিযান পরিচালনা করবে। এদিকে নিরাপত্তার স্বার্থে মৌলভীবাজারের বড়হাট ও নাসিরপুরে গত বুধবার দুপুর থেকে জারিকৃত ১৪৪ ধারা অব্যাহত রয়েছে।

বুধবার রাতে আলোর অস্পষ্টতা ও দিনে ঝড়-বৃষ্টির কারণে প্রায় ১৪ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজারের নাসিরপুরে দুপুর পৌনে বারোটা থেকে ১টা পর্যন্ত শতাধিক গুলির আওয়াজ শুনা যায়। ১. ৩ মিনিট থেকে ১. ৮ মিনিট এই ৫ মিনিটে প্রায় ১৭৯ টি গুলির শব্দ পাওয়া যায়। এরপর থেমে থেমে দুপুর ২টা পর্যন্ত গুলির আওয়াজ শুনা যাচ্ছিল। দুপুর ১২ : ৫৭ মিনিটে বিকট শব্দে একটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনা যায়। দুপুর ২টার পরে আর কোন গুলির শব্দ পাওয়া যায়নি। বিকাল ৫টায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে মিডিয়াকে বিষয়টি অবহিত করা হয়।

এর আগে দুপুর এগারোটার দিকে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট প্রধান মনিরুল ইসলাম সংক্ষিপ্ত প্রেসব্রিফিংয়ে বলেন, ‘মৌলভীবাজারের দুটি জঙ্গি আস্তানায় গতকাল বুধবার যে অভিযান শুরু হয়ছিল, বৈরি আবহাওয়ার কারণে আজ (৩০ মার্চ) সকালের দিকে তা শুরু করা যায়নি। এখন নাসিরপুরে অভিযান শেষ করে আমরা বড়হাটে অভিযান শুরু করব।’

বুধবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টা থেকে মৌলভীবাজারের নাসিরপুর গ্রামে পুলিশের বিশেষ বাহিনী সোয়াট ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা ‘অপারেশন হিট ব্যাক’ নাম দিয়ে এই অভিযানে নামে। এর সত্যতা মিডিয়াকে নিশ্চিত করেন পুলিশের সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি কামরুল আহসান। বুধবার রাত ১১টার দিকে সোয়াট ও কাউন্টার টেররজিম ইউনিটের সদস্যদের নাসিরপুর গ্রাম থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়।

উল্লেখ্য যে, মৌলভীবাজারে সাইফুর রহমান নামের এক লন্ডন প্রবাসীর বাসা ও বাড়িটি বুধবার ভোর রাত থেকেই ‘জঙ্গি সন্দেহে’ ঘিরে রাখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। বাসাটি মৌলভীবাজার পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বড়হাট আবুশাহ (র.) মাদরাসার সন্নিকটে। তার থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের নাসিরপুর গ্রামে বাংলা ধাঁচের ˆতরি একটি সুরম্য বাড়ি।

Comments

comments