অাতাউর রহমান কাজল, শ্রীমঙ্গল: গবেষণা কাজের অংশ হিসেবে লাউয়াছড়া জাতীয় পার্কে অজগরের শরীর থেকে রেডিও ট্রান্সমিটার অপসারন করা হয়েছে। প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে অজগরের শরীরে ‘রেডিও ট্রান্সমিটার’ বহন করার পর সাপটির শরীর থেকে ট্রান্সমিটারটি খুলে ফেলা হলো।
গতকাল সোমবার মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় পার্কের রেসকিউ সেন্টারে অপারেশনের মাধ্যমে ট্রান্সমিটার খুলে ফেলা হয়।
এ সময় ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন এলায়েন্সের চিফ এক্সিকিউটিভ এবং প্রধান গবেষক শাহরিয়ার সিজার রহমান, লাউয়াছড়া জাতীয় পার্কের বিট অফিসার আনোয়ার হোসেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বনবিদ্যা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হাসান আহমেদসহ সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিরা উপস্হিত ছিলেন।
অপারেশনটি পরিচালনা করেন ভেটেরেনারি সার্জন ডা. আবু সায়েম আরিফ। তিনি জানান, রেডিও ট্রান্সমিটারটি বসানোর পর এখন পর্যন্ত সাপটির দৈহিক কোনো সমস্যা বা জটিলতা হয়নি এবং এই এক বছর সময়কালে সাপটির ওজন বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ১০০০ গ্রাম।
ডা. আরিফ আরো বলেন, রেডিও ট্রান্সমিটারের ব্যাটারির মেয়াদ থাকে দেড় বছর থেকে দুই বছর। তাই সময় থাকতেই রেডিও ট্রান্সমিটারটি খুলে ফেলা হয়েছে। অজগর সাপটি বর্তমানে সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে। তিনি অারো বলেন, আগামী ২/৩ দিন অবজারভেশনে রেখে অজগরটিকে অাবারো লাউয়াছড়ায় ছেড়ে দেয়া হবে।
লাউয়াছড়া বনে সাপ নিয়ে গবেষনারত এবং এ প্রকল্পের প্রধান গবেষক শাহরিয়ার সিজার রহমান বলেন, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ‘বাংলাদেশ পাইথন প্রজেক্টের’ অধীনে গবেষণা কাজের অংশ হিসেবে এই অজগর সাপের শরীরে একটি রেডিও ট্রান্সমিটার স্থাপন করা হয়। মূলত অজগর সাপের গতিবিধি, চলাচল, খাদ্যগ্রহন ও তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য- উপাত্ত সংগ্রহ করতেই এই রেডিও ট্রান্সমিটার স্থাপন করা হয়।
বাংলাদেশ বন বিভাগের সহায়তায় ‘ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন এলায়েন্স’ গত চার বছর ধরে লাউয়াছড়া জাতীয় পার্কে ‘রেডিও রিসিভার’ এর মাধ্যমে ট্র্যাকিং করে অজগর সাপের গতিবিধি, চলাচল পর্যবেক্ষণ করে গবেষণা করে আসছে।
প্রসঙ্গত: গত ২০১১ সালে লাউয়াছড়ায় প্রথম সাপ নিয়ে গবেষণা শুরু করেন শাহরিয়ার সিজার রহমান। তৎকালীন সময়ে যুক্তরাস্ট্রের ওরিয়েন সোসাইটি নামের একটি সংস্হার অর্থায়নে বাংলাদেশের কারিনাম নামের একটি সংগঠন বাংলাদেশ বন বিভাগের সহায়তায় অজগর গবেষণা প্রকল্পের কাজ শুরু করেছিল।
Comments
comments