গোলাম মওলা সিরাজ, কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের চিলমারীতে কালবৈশাখী ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তরা খোলা আকাশের নীচে মানবেতরভাবে জীবন-যাপন করছে। ঘটনার ৪দিন পরও তাদের পাশে এসে দাঁড়ায়নি কেউই। গত শনিবার বিকেলে হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যায় গ্রামের সবকিছুই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গাছপালা, ফসলী জমিন ও ঘরবাড়ি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। অর্থাভাবে বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি মেরামত করতে না পেরে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো খোলা আকাশের নীচে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। সাহায্যের আশায় চেয়ারম্যান-উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হলেও বাড়ায়নি কেউ সাহায্যের হাত।
জানা যায়, উপজেলার নয়ারহাট, অষ্টমীরচর, চিলমারীসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের উপর দিয়ে গত শনিবার প্রচন্ড কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যায়। এতে অর্ধ শতাধিক বসতবাড়ি বিধ্বস্ত হয়। নষ্ট হয়ে যায় বোরো ধানসহ অন্যান্য ফসলী জমিন। বেশিরভাগ পরিবার ঘরবাড়ি মেরামত করতে না পারায় বর্তমানে খোলা আকাশের নীচে বসবাস করছে। চিলমারী ইউনিয়নের কড়াই বরিশাল গ্রামের সৈয়দ জামান, বিষার পাড়ার হাসেনা (৪০), শাহজাহান (৪৫), গাজিরপাড়া গ্রামের রাশেদা, মনতোলার রাবেয়া, অষ্টমীরচর ইউনিয়নের মাইচবাড়ীর আমেনা, খদ্দবাশপাতারি এলাকার মালেক, গোলাম, হাসেনসহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। সোমবার সরজমিনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঝড়ের তান্ডবের শিকার মানুষজনের আহাজারি। ক্ষতিগ্রস্ত বেশির ভাগ পরিবার ঘর-বাড়ি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে। শুধু তাই নয় ক্ষতিগ্রস্ত অনেক পরিবার ছেলে মেয়ে নিয়ে অর্ধহারে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে। ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, ঝড়ের ৪ দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে কোন সাহায্য তারা পাইনি। এবং কোন সরকারী বা বে-সরকারীর প্রতিষ্ঠানের কোন কর্মকর্তার তাদের খোজ খবরও নেয়নি। ফলে পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা মানবেতর দিন কাটাচ্ছে। শুধু তাই নয় কালবৈশাখীর ছোবল ও বৃষ্টিতে ইরি-বোরোর ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় কৃষকরাও দিশাহারা হয়ে পড়েছে কিন্তু তাদের পাশেও এখন পর্যন্ত দাঁড়ায়নি কৃষি বিভাগের লোকজন।
চিলমারী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য শহিদুর রহমান জানান, আমার এলাকার অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি লন্ডভন্ড হওয়ায় অনেকে এখন খোলা আকাশের নিছে অবস্থান করছে। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো মানবেতর জীবন যাপন করছে। একই কথা জানালেন অষ্টমীর চর ইউপি চেয়ারম্যান। তারা আরও জানান, বিষয়টি পিআইও এবং ইউএনও স্যারকে জানিয়েছি কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজুদৌলা জানান, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা এখনো আমার কাছে আসেনি। তালিকা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মির্জা মুরাদ হাসান বেগ জানান, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করতে বলা হয়েছে। চুড়ান্ত তালিকা পেলে শীঘ্রই ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায়তা দেয়া হবে।
Comments
comments