Download Free BIGtheme.net
Home / লাইফস্টাইল / যেদিন যেমন পূজার সাজ

যেদিন যেমন পূজার সাজ

bdonline24_1680

লাইফস্টাইল ডেস্ক অন্যান্য দিনগুলোর তুলনায় উৎসবের দিনগুলোতে একটু ভিন্ন রূপে থাকতে স্পেশাল সাজগোজের দরকার হয়। আর তা যদি হয় পূজার সময় তাহলে তো কথাই নেই। প্রতিদিন ভিন্ন সাজ এবং ভিন্ন পোশাকে নিজেকে আলাদা দেখাতে চেষ্টা করেন সকলেই।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা। এরই মধ্যে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মন মেতে উঠেছে উৎসবের আনন্দে। পূজার সবচেয়ে বড় আনন্দ মন্দিরে মন্দিরে ঘুরে বেড়ানো। তবে উৎসবের আনন্দে শুধু ঘুরে বেড়ালেই হবে না, এর পাশাপাশি নজর রাখতে হবে নিজের সাজ-পোশাকের দিকেও।

পূজার সময় বিশেষ করে ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত পুরোদমে চলে পূজার উৎসব। আর সে সময়টায় লুকটাও একটু আকর্ষণীয় হওয়া চাই। ষষ্ঠীর হালকা সাজটাই দশমীতে গাঢ় হয়ে ওঠে। তাই সতর্ক ভাবে সাজগোজ করা ভালো।

শারদীয় দুর্গাপূজার ষষ্ঠী থেকে দশমী, পাঁচটা দিন। প্রতি দিনই নিজেকে সাজানো যাবে মন ভরে। পোশাক হতে পারে দেশি কিংবা পাশ্চাত্য ঢংয়ের। তবে এক্ষেত্রে কোন সাজে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে থাকেন সে অনুযায়ী এবং রুচি ও ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মিলিয়ে পোশাক বেছে নিতে হবে।

শারদীয় দুর্গাপূজার ষষ্ঠী থেকে দশমী এই পাঁচ দিন সাজা যাবে ইচ্ছামতো। পোশাকটি হতে পারে দেশি কিংবা পাশ্চাত্য ঢঙের। তবে সাজতে হবে আপনার স্বাচ্ছন্দ্যবোধ, রুচি ও ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মিলিয়ে।

আধুনিক, ঐতিহ্যবাহী, সনাতনী যে কোনোভাবে নিজেকে সাজিয়ে তোলা যাবে। এই সাজ-সজ্জার খুঁটিনাটি বিষয়ে জানিয়েছেন রূপ বিশেষজ্ঞ শিবানী দে।

স্নিগ্ধ থাকুন সপ্তমীতে

সপ্তমীতে একটু হালকা সাজই মানানসই। দিনের বেলার সাজে ন্যাচারাল লুকটা ধরে রাখা জরুরি। কেননা, দিনে মন্দিরে যাওয়া বা পূজার অঞ্জলি দেওয়ার সময় প্রকৃতির সজীব ভাবটা থাকা চাই আপনার সাজে। পোশাকের মধ্যে হাল্কা নীল, আকাশি, সি্নগ্ধ বা নেভি ব্লু রঙের পোশাক নির্বাচন করতে পারেন।

এ ছাড়া হালকা ছাপার সুতি শাড়ি বা একরঙা পাড় শাড়ি পরতে পারেন। দিনের উৎসবে বেইজ করার জন্য ত্বকের টোনের সঙ্গে মিলিয়ে ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার বা খুব হালকা করে ফাউন্ডেশন লাগাতে পারেন। ফাউন্ডেশন হালকা করার জন্য এতে কিছুটা পানি মিশিয়ে নিন। খুব অল্প পরিমাণে লাগিয়ে এর ওপর পাউডার বুলিয়ে নিন। তবে মেকআপের শুরুতে ক্লিনজিং মিল্ক দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে সানস্ক্রিন লোশন লাগাতে ভুলবেন না।

দিনে চোখের সাজে অফহোয়াইট হাইলাইট, কালো ও বাদামি রঙের কম্বিনেশনের আইশ্যাডো, পেনসিল আইলাইনার ব্যবহার করতে পারেন। অথবা চাইলে শুধু কাজলের একটা হালকা রেখা টেনে দিন চোখে। মাশকারা পরতে পারেন মোটা করে। ঠোঁটে কোরাল, হালকা গোলাপি লিপস্টিক বা লিপগ্গ্নস লাগাতে পারেন। সঙ্গে থাকতে পারে হালকা পিঙ্ক বল্গাশন। শাড়ির সঙ্গে মানানসই টিপ পরলে ভালো লাগবে। বিবাহিতরা সিঁথি রাঙাতে পারেন সিঁদুরে।

সারাদিনের জন্য বের হলে চুলটা এমনভাবে বাঁধুন, যাতে বাড়তি ঝামেলা পোহাতে না হয়। পাশাপাশি সপ্তমীর রাতের সাজটাও হবে হালকা। ফাউন্ডেশন লাগিয়ে তার ওপর ফেস পাউডার লাগিয়ে নিন। চোখের ওপর ব্লু বা গ্রে আইশ্যাডো কম্বিনেশন করে লাগিয়ে নিন। এর ওপর হাইলাইট করুন সিলভার কালার দিয়ে। চোখে মোটা করে কাজল পরতে পারেন। কয়েক পরতের মাশকারা পরলে আইলেশ ঘন দেখায়। ঠোঁটে লিপস্টিক পরুন হালকা রঙের। কপালে বড় লাল টিপ ও সিঁথিতে সিঁদুর পরুন। শাড়ির সঙ্গে সামনের চুল ফুলিয়ে পেছনটা আয়রন করে খোলা রাখতে পারেন।

স্বকীয় সাজে অষ্টমী

অষ্টমীর সাজ হওয়া উচিত একেবারেই নিজস্ব ঢঙে। তবে দিনের বেলার সাজে ন্যাচারাল লুকটাকেই প্রাধান্য দিতে হবে। লাল, মেরুন, তসর, সিল্ক, কাতান সাদার মধ্যে লাল পাড় শাড়ি পরতে পারেন। আঁচলে বেশি কাজ আছে এরকম লাল পাড়ের শাড়ি একপ্যাঁচ করে পরতে পারেন।

অষ্টমীতে সকালে লাল শাড়ি পরার প্রচলন আছে। দিনের উৎসবে বেইজ করার জন্য ত্বকের টোনের সঙ্গে মিশিয়ে ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার বা খুব হালকা করে ফাউন্ডেশন লাগাতে পারেন। ফাউন্ডেশন হালকা করার জন্য এতে কিছু পানি মিশিয়ে নিন। খুব অল্প পরিমাণে লাগিয়ে এর ওপর পাউডার বুলিয়ে নিন। পোশাকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে বা কন্ট্রাস্ট করে চোখে আইশ্যাডো লাগান। পেনসিল আইলাইনার দিয়ে কিছুটা মোটা করে লাইন টেনে আইশ্যাডো ব্রাশ দিয়ে মিলিয়ে নিন। মাশকারা পরুন ঘন করে।

ঠোঁটে লাল রঙের লিপস্টিক লাগাতে পারেন। সঙ্গে হালকা পিংক ব্লাশন। কপালে বড় লাল টিপ লাগিয়ে নিতে পারেন। ট্রেডিশনাল লুক আনতে পায়ে আলতা পরতে পারেন মোটা করে। চুল সামনের দিকে সেট করে পেছনে কার্ল করে ছেড়ে রাখুন। কানের পেছনে গুঁজে দিন বেলি ফুলের মালা বা সাদা ও লাল জারবেরা।

অষ্টমীর রাতের সাজটা হওয়া চাই জমকালো। ফাউন্ডেশন লাগিয়ে তার ওপর ফেস পাউডার লাগিয়ে নিন। চোখের ওপর পছন্দ মতো রঙের আইশ্যাডো বা এর কম্বিনেশন করে লাগিয়ে নিতে পারেন। সিলভার কালার দিয়ে এর ওপর হাইলাইট করে নিন।

পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে গাঢ় রঙের লিপস্টিক পরুন। কপালে বড় একটি টিপ এবং শাড়ির রঙের সঙ্গে মিল রেখেও সিঁথিতে সিঁদুর পরতে পারেন। রাতের সাজের গহনা হওয়া চাই ভারি। পোশাক অনুযায়ী চুলের সাজ হতে পারে ব্লো আইরন, কারলিং, স্পাইরাল রিং, রিং বান, ফ্রেঞ্চ বেণি অথবা খোঁপা।

জমকালো সাজ নবমীর

নবমীর দিন সবাই চায় একটু জমকালো সাজে নিজেকে সাজাতে। দিনের উৎসবে হালকা সাজের সঙ্গে সিলভার অথবা মেটালের গহনা পরতে পারেন। চুল সামনের দিকে সেট করে পেছনে খোঁপা করে রাখুন। নবমীতে হয় সান্ধ্যপূজা। আর সন্ধ্যার পর বলেই পার্টিসাজকে প্রাধান্য দেয় সবাই। ভারি গহনা, রঙ-বৈচিত্র্যপূর্ণ পোশাক, ভারি মেকআপ, বাহারি চুলের সাজ, তাজা ফুল এদিনের সাজের অনুষঙ্গ। সাজের শুরুতে ফাউন্ডেশন লাগিয়ে তার ওপর ফেসপাউডার লাগিয়ে নিন।

চোখের ওপর শাড়ির রঙের সঙ্গে মিল রেখে আইশ্যাডো লাগিয়ে নিন। এর ওপর হাইলাইট করুন গোল্ডেন কালার দিয়ে। চোখে মোটা করে কাজল পরুন। জমকালো ভাব ফুটিয়ে তুলতে মাশকারা পরতে হবে কয়েক পরত করে। ব্লাশনটা পরতে হবে গাঢ় করে। ঠোঁটে লিপস্টিকটাও হতে হবে গাঢ় রঙের। চাইলে কপালে ট্রেডিশনাল অথবা ট্রেন্ডি ডিজাইনের টিপ পরতে পারেন। আঙুলে বড় পাথরের আংটি। গলায় ও কানে পরুন পাথরের গহনা। পারফিউম ব্যবহার করুন। শাড়ির সঙ্গে চুলের সাজও হতে হবে জমকালো।

দশমীর সাজ

দশমী মানেই পূজার শেষ দিন। দশমীতেই দুর্গা মায়ের বিসর্জন। মর্ত্য ছেড়ে চলে যাবেন স্বর্গে। বিসর্জনের পর থেকে শুরু হয় বিজয়া। শারদীয় দুর্গা উৎসবের প্রধান আকর্ষণ দশমী। সাজপোশাকের ক্ষেত্রে দশমীর রয়েছে সনাতনী ভাবধারা। দশমীর সাজ মানে লাল পাড়ের সাদা শাড়ি, একদম লাল রঙা শাড়ি বা সাদা জামদানি আর লাল ব্লাউজ হাতে নকশা করা। সব বয়সী নারীর ক্ষেত্রেই এটি প্রযোজ্য।

অনেকে আবার প্রতিমার মতোও সাজতে পছন্দ করেন। চোখে কাজলের টানা লাইনার, লাল লিপস্টিক, সি্নগ্ধ মেকআপ আর সিঁদুর। এদিন ঠাকুরকে সিঁদুর পরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি নিজেরাও মেতে ওঠেন সিঁদুর খেলায়। একান্তই যদি শাড়ি না পরেন, তা হলে সাদা আর লালের কম্বিনেশনের কোনো ড্রেস পরা যেতে পারে।

সাদা কুর্তির সঙ্গে লাল পাজামা আর লাল দোপাট্টা হতে পারে। সাদা শাড়ির সঙ্গে লাল নেটের ফুলহাতা ব্লাউজ মানানসই। মাথায় একগুচ্ছ সাদা ফুলের মালা আর কপালে বড় লাল টিপে পরিপূর্ণ হতে পারে আপনার দশমীর সাজ।
সূত্রঃ সমকাল

Comments

comments