অনলাইন ডেস্কঃ জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারী ও এক ভর্তীচ্ছুকে পুলিশে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
কর্মচারী আরিফুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অফিস সহকারী। ভর্তীচ্ছু মো. শাহীনের বাড়ি নওগাঁ জেলায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের প্রশাসক অধ্যাপক মশিহুর রহমান বলেন, আরিফুল ইসলামের গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় বুধবার বিকেল ৩টার দিকে তাকে বিভাগের অফিসে ডাকেন শিক্ষকরা। সেখানে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তার মুঠোফোনে জালিয়াতির চেষ্টা সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যায়। এছাড়া এক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী তাকে ফোন করে জালিয়াতিতে সহযোগিতার কথা বলে। এ সময় শিক্ষকরা কৌশলে আরিফকে দিয়ে কথা বলিয়ে ওই ভর্তিচ্ছুকে বিভাগে আসতে বলেন। ভর্তিচ্ছু শাহীন বিভাগের সামনে আসলে তাকে ধরা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ‘রাজশাহীর কাটাখালির মজনু নামের এক ‘হোতার’ সঙ্গে আরিফের একটা যোগাযোগ ছিল। মজনু ভর্তিচ্ছুই শিক্ষার্থীদের যোগাড় করত। আর আরিফ প্রশ্নপত্র বাইরে এনে দেবে, এরকম নানা ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে শিক্ষার্থীকে বোঝাতে সক্ষম হতো যে, প্রশ্নপত্র শিক্ষার্থীকে দিতে পারবে। এভাবে শিক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে সরে পড়তো এই চক্র। এভাবে টাকা নিতে পারলে আরিফ প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে পেত দুই হাজার টাকা। তিনি গত দুই বছর এই চক্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মজিবুল হক আজাদ খান আরিফ ও শাহীনকে আটক করে নিয়ে যান। তাদের জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের পক্ষ থেকে প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান বলেন, আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী আরিফকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তার মোবাইলের তথ্য খতিয়ে দেখা হয়েছে। তিনি ভর্তি করিয়ে দেয়ার কথা বলে ভর্তিচ্ছুদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়। আরিফ একটা প্রতারণা চক্রের সদস্য। বিভাগের পক্ষ থেকে তার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী শাহীন প্রতারণা শিকার হতে
যাচ্ছিল বলেও জানান তিনি।
উপ-উপাচার্য জানান, মুচলেকা নিয়ে ওই শিক্ষার্থীকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে কর্মচারী আরিফের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে বিভাগের শিক্ষকদের মাধ্যমে তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
Comments
comments