অনলাইন ডেস্ক: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি বলেছেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়কালে জিয়াউর রহমান প্রথম মুজিবনগর সরকারের অধীনে মুক্তিযুদ্ধ করতে বিরোধিতা করেছিলেন। ১৫ আগস্টের পরে খালেদ মোশাররফসহ অনেক দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে পুনর্বাসন করছেন। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল ও ক্ষমতার অপব্যবহার এবং মুক্তিযোদ্ধা হত্যার দায়ে জিয়ার মরণোত্তর বিচার হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
শাহবাগ কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনে আজ দুপুরে মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীর উত্তম স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। ৭ নভেম্বর মুক্তিয়োদ্ধা হত্যা দিবস পালন উপলক্ষে মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীর উত্তম স্মৃতি পরিষদ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
পরিষদের সভাপতি খালেদ মোশাররফ বীর উত্তমের সহধর্মীনি সালমা খালেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সংবিধান প্রণেতা ও বিশিষ্ট আইনজীবী এবং মহান মু্িক্তযুদ্ধের সংগঠক ব্যারিস্টার আমির উল ইসলাম, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. হারুন-উর রশিদ, খালেদ মোশাররফ বীর উত্তমের কন্যা মেহজাবিন এমপি, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক শফিকুর রহমান, মেজর (অব:) নাছির উদ্দিন, ক্যাপ্টেন (অব:) শচিন কর্মকার ,মাহবুব উদ্দিন বীর বিক্রম প্রমুখ।
মোজাম্মেল হক মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম ,মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক কর্মসূচি সম্পর্কে আরো বলেন, জিয়াউর রহমান ও মোস্তাকগংরা একাত্তুরের যুদ্ধকালীন সময়েও নানা ষড়যন্ত্র করেছিল। খালেদ মোশাররফ বীর উত্তম জিয়ার মতো জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতি সব সময় মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীর উত্তমদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।
ব্যারিস্টার আমির উল ইসলাম বলেন, মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীর উত্তমদের অবদান দেশবাসী চিরদিন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে এবং ঘাতকদের ঘৃণা করবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. হারুন-উর রশিদ বলেন, নতুন প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে। সিপাহী বিপ্লবের নামে প্রতি বিপ্লব করে জিয়া ক্ষমতা দখল করেছে। খালেদ মোশাররফ বীর উত্তমের কন্যা মেহজাবিন এমপি মুক্তিযোদ্ধা হত্যাকারীদের বিচার দাবি করে বলেন, খালেদ মোশাররফ বীর উত্তমকে প্রধান সেনাপ্রধানের মর্যাদা দিয়ে সেনানিবাস এলাকায় ছবি টানাতে হবে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক শফিকুর রহমান বলেন, মূলধারা রাজনীতির বিরোধী শক্তি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করা হয়েছিল। সেই ঘাতক গোষ্ঠি আজও আবার একই কায়দায় নাসিরনগরে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা করছে। মেজর (অব:) নাছির উদ্দিন বলেন, মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীর উত্তমকে হত্যার মাধ্যমে জিয়া ক্ষমতা দখল করে দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধার হত্যা করেছিল।
অন্যান্য বক্তারা বলেন, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী বিপ্লবের নামে প্রথমে হত্যা করা হয় খালেদ মোশাররফ (বীর উত্তম), এরপর কে এন হুদা (বীর উত্তম) এবং এটি এম হায়দারকে (বীর বিক্রম)কে হত্যা করে। পরবর্তীতে একে-একে গণভোট, প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, স্থানীয় পরিষদ নির্বাচন এবং পার্লামেন্ট নির্বাচন দিয়ে জিয়াউর রহমান নিজেকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করলেও তার আমলে ২০টির বেশি অভ্যুথান হয়েছিল বলে বক্তারা উল্লেখ করেন।
সর্বশেষ ১৯৮১ সালের ৩০মে চট্রগ্রামে সামরিক অভ্যুথানে জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর মেজর মঞ্জুরসহ অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছিল এবং গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল বক্তারা উল্লেখ করেন।
Comments
comments