অনলাইন ডেস্কঃ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার রাজাকার কমান্ডার গাজী আব্দুল মান্নান মৃত্যুবরণ করেছেন।
আজ সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) ভোরে নারায়ণগঞ্জ জেলার কাঁচপুরে এক আত্মীয়ের বাসায় মারা যান তিনি।করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির রব্বানী রাজাকার কমান্ডার আব্দুল মান্নানের বড় ছেলে আজিজুল হক লিটনের বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মামলা দায়েরে পর থেকে রূপগঞ্জের একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে আত্মগোপনে ছিলেন গাজী মান্নান।
জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য অনুযায়ী, করিমগঞ্জের চরপাড়া গ্রামের মান্নানের বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। চার দশক আগে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ঘটানো যুদ্ধাপরাধের বিচার তিনি এড়িয়ে গেছেন পালিয়ে থেকে।
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করা মান্নান একাত্তরে স্থানীয় রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার বনে যান এবং রীতিমতো সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। সহযোগীদের নিয়ে তিনি নিজের এলাকায় নানা মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটান উঠে আসে আদালতের রায়ে।
প্রসঙ্গত, একাত্তরে অপহরণ, নির্যাতন, হত্যার মতো যুদ্ধাপরাধের দায়ে চলতি বছর ৩ মে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মান্নানসহ কিশোরগঞ্জের চার রাজাকার সদস্যের প্রাণদণ্ডের রায় দেয়, আরও একজনকে দেওয়া হয় আমৃত্যু কারাদণ্ড।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতা বিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১০ সালের ২ মে করিমগঞ্জ উপজেলার আয়লা গ্রামের মিয়া হোসেনের ছেলে গোলাপ মিয়া কিশোরগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-৬ আদালতে একটি মামলা করেন। পরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মামলাটি তদন্ত শুরু করেন। তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর গাজী আবদুল মান্নান, ক্যাপ্টেন এ টি এম নাছির, তার ভাই অ্যাড. শামছুদ্দিন আহমেদ এবং অপর দুই রাজাকার হাফিজ উদ্দিন ও আজাহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান।
২০১৫ সালের ২৭ নভেম্বর ৫ রাজাকারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। পরে এ বছরের ৩ মে ৫ রাজাকারকে মৃত্যুদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল।
বর্তমানে সাজাপ্রাপ্ত অপর ৪ আসমির মধ্যে শামসুদ্দিন গ্রেফতার থাকলেও পলাতক রয়েছেন মামলার বাকি ৩ আসামি।
Comments
comments