অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশের ইতিহাসে কলোরাত্রিখ্যাত ২৫ মার্চ ‘গণহত্যা দিবস’ এর স্বীকৃতি পেল। স্বাধীনতার ৪৬ বছর পরে এ স্বীকৃতি দেয়া হল। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ ভয়াল কালো রাত্রিতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অপারেশন সার্চ লাইটের নামে চালানো বর্বরতাকে জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়েছে।
শনিবার ১০ম জাতীয় সংসদের সমাপনী দিনে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস ঘোষণা এবং জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিকভাবে এ দিবসের স্বীকৃতি আদায়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের প্রস্তাব দেন জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রস্তাবটির ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদসহ অর্ধশতাধিক এমপি। তবে শিরীন আখতারের প্রস্তাবের ওপর সামান্য সংশোধনী আনেন সরকারদলীয় চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ। সংশোধনীতে তিনি বলেন, মূল প্রস্তাবের দ্বিতীয় পঙ্ক্তিতে অবস্থিত আন্তর্জাতিকভাবে শব্দটির পূর্বে জাতিসংঘসহ শব্দটি সন্নিবেশ করা হোক। পরে কণ্ঠভোটে প্রস্তাবটি সর্বসম্মতভাবে পাস হয়।
আলোচনায় অংশ নিয়ে গণহত্যার সংজ্ঞা তুলে ধরে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, জাতিসংঘ ১৯৪৮ সালের ৯ ডিসেম্বর ‘জেনোসাইড’কে কনভেনশনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তাই জাতিসংঘের কনভেনশন অনুযায়ীই আমাদের সুযোগ রয়েছে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে গ্রহণ করতে।
শেখ হাসিনা বলেন, এই প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করা করা হোক। কারণ এই গণহত্যার রূপ যারা দেখেছে তারা কোনদিন ভুলতে পারবে না। সংসদে যে ভিডিও চিত্র দেখলাম। সেখানে কতটুকুই বা আছে। এরকম বহু ঘটনা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে আছে।
সংসদ নেতা বলেন, সংসদে ২৫মার্চ গণহত্যা দিবসের যে প্রস্তাবটি এসেছে তা আমরা সমর্থন করছি এবং সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
এর মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সংঘটিত গণহত্যার দিনটি জাতীয়ভাবে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি পেল।
দীর্ঘ সোয়া ৬ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এ আলোচনায় সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা ১ ডিসেম্বরকে মুক্তিযোদ্ধা দিবস ও সিমলা চুক্তি অনুযায়ী আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে পাকিস্তানি ১৯৫ যুদ্ধাপরাধীর বিচারেরও দাবি জানান।
Comments
comments