অনলাইন ডেস্ক: তিস্তা চুক্তির সমাধান খুব শিগগিরই হবে বলে আশ্বস্ত করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, আমাদের সম্পর্ক দুই দেশের মানুষের কল্যাণের জন্যই। এ কারণে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। একই সঙ্গে তিনি অভিন্ন নদীর পানির সুষ্ঠু বণ্টনের কথাও জানান।
আজ শনিবার (০৮ এপ্রিল) দুপুরে নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে দুই প্রধানমন্ত্রীর শীর্ষ বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানানো হয়। বাংলাদেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুপুর পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে ৩৪টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। প্রতিরক্ষা, ঋণ, মহাকাশ, পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার, তথ্যপ্রযুক্তি, বিদ্যুৎ, জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতে এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
মোদী বলেন, “আমাদের প্রতিশ্রুতি এবং অব্যাহত প্রচেষ্টা সম্পর্কে আমি আপনাকে (শেখ হাসিনা) এবং বাংলাদেশের জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাই। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, আমার ও আপনার সরকারই তিস্তার পানি বণ্টন সমস্যার সমাধানে পৌঁছতে পারবে। তিস্তা চুক্তি ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বলেও স্বীকার করে নেন মোদী।
নরেন্দ্র মোদি বলেন, সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র দুই দেশের জনগণ বিশেষ করে তরুণদের মধ্যকার বন্ধনকে আরও জোরালো করবে। ভারত সব সময় বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছে। তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশের জিরো টলারেন্স বা শূন্য সহনশীলতা নীতি ভারতের কাছে অনুপ্রেরণা।
পশ্চিমবঙ্গ নিজেই পানি পাচ্ছে না অভিযোগ করে বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা চুক্তি সম্পাদনে আপত্তি মমতার। কোনো পক্ষের ক্ষতি না করে তিস্তার সমাধানের উপায় খুঁজতে দিল্লিতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আমলাদের মধ্যে একটি বৈঠক হয়েছে সম্প্রতি। শেখ হাসিনার সফরের আগে এই ধরনের উদ্যোগ মোদীর তৎপরতার ইঙ্গিত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর হায়দ্রাবাদ হাউজে মোদীর এই ঘোষণার সময় উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও, যার কারণে দুই দেশের এই চুক্তি ঝুলে আছে ছয় বছর ধরে। তিস্তার জট কাটাতে নরেন্দ্র মোদীর উদ্যোগে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে শীর্ষ বৈঠকের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত করা হয়। খুলনা-কলকাতা বাস ও ট্রেন উদ্বোধনে তাকেও সঙ্গে রাখেন মোদী।
এছাড়া বাংলাদেশের সঙ্গে নতুন করে সাড়ে চারশ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি এবং প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ক্রয়ের ক্ষেত্রে ৫০ কোটি ডলার সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
এর আগে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী হিন্দি ভাষায় অনুদৃত ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন। এরপর তারা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দিল্লির প্রাণকেন্দ্রে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সড়ক’ নামে একটি সড়কের নামফলক উন্মোচন করেন। এটি আগে পার্কস্ট্রিট নামে পরিচিত ছিল।
একই সঙ্গে তারা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে খুলনা-কলকাতা রুটে ট্রেন, ঢাকা-খুলনা-কলকাতা রুটে সরাসরি বাস সার্ভিস-সহ আরও কয়েকটি সার্ভিস চালু করেন। এ সময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
Comments
comments