Download Free BIGtheme.net
Home / অপরাধ / নড়াইলে অবৈধভাবে পুকুর দখল করে দোকান নির্মাণের অভিযোগ

নড়াইলে অবৈধভাবে পুকুর দখল করে দোকান নির্মাণের অভিযোগ

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল : নড়াইলে ব্যাক্তি মালিকানাধীন একটি পুকুর স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক ইজারা দেবার পর থেকেই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। পুকুরটি ইজারা দেবার সাথে সাথেই বর্তমান ইজারাদার ওই পুকুর থেকে পূর্ববর্তী ইজারাদারের চাষ করা মাছ ধরছে এবং বিক্রি করেছে। এমনকি বর্তমান ইজারাদার পুকুরপাড়ে অবৈধভাবে বাঁধ/বেড়া নির্মাণ করে দোকানঘর উঠানোর চেষ্টা চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে ক্ষতিগ্রস্থরা জানালেও প্রশাসন অভিযোগ আমলে নিচ্ছেনা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নড়াইলের লোহাগড়া বাজার সংলগ্ন জয়পুর মৌজার ৩৪৪৪,৩৪৪৫,৩৪৪৬,৩৫৩৮,৩৪৯৩ নং দাগের সাড়ে ৩ একর জমিতে পুকুর অবস্থিত। ওই জমির মালিক স্থানীয় মোঃ আকরাম হোসেন গং। পুকুর সংলগ্ন লোহাগড়া মৌজার ১৩২৮ নং দাগের ৫একর ১৪ শতক জমি সরকারি খাস জমি। ওই পুকুরের মধ্যে দেড় একর জমি সরকারি/খাস এমন দাবি স্থানীয় প্রশাসনের থাকলেও স্থানীয়দের দাবি সরকারি বা খাস জমি পুকুরের উপরে অবস্থিত। অর্থাৎ পুকুরটি সম্পূর্ণ ব্যাক্তি মালিকানাধীন জমিতে। এ নিয়ে বিরোধ থাকায় ভূমি অফিসসহ দেওয়ানি আদালতে মামলা চলছে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ,আদালতে মামলা চললেও স্থানীয় প্রশাসন বিশেষ সুবিধা নিয়ে ইচ্ছেমতো লাল নিশান টানানোর মাধ্যমে সম্পূর্ণ পুকুরের ইজারা ও দখল বুঝিয়ে দিয়েছে বর্তমান ইজারাদার কে। বর্তমান ইজারাদার পুকুরে আগের ইজারাদারের চাষ করা মাছ ধরছে। পুকুরের মধ্যকার ওই জমির দাবিদার মালিক আকরাম হোসেন ভুইয়া গত ১৪ মে পুকুরে সকল প্রকার কার্যক্রম স্থগিতের জন্য জেলা ও উপজেলার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করলেও এখনো কোন ফল পাননি তিনি।

খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, লোহাগড়া বাজার ও জয়পুর মাদ্রাসা সংলগ্ন প্রায় ৬ একরের পুকুরটি উপজেলা প্রশাসন (বাংলা ১৪২৪ সাল থেকে ১৪২৬ সাল পর্যন্ত) তিন বছরের জন্য মরিচপাশা মধুমতি যুব উন্নয়ন মৎস্য খামার সমবায় সমিতি লিঃ এর নামে ইজারা দেয়। ইজারা দেবার পর সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসন পুকুরে লাল নিশান টানানোর মধ্যদিয়ে ইজারাপ্রাপ্তদের ওই পুকুরের দখল বুঝিয়ে দেয়। দখল বুঝে নেবার পর থেকে কয়েক দফায় মরিচপাশা মধুমতি যুব উন্নয়ন মৎস্য খামার সমবায় সমিতি লিঃ এর পরিচালকরা ওই পুকুর থেকে মাছ ধরে বিক্রি করছে।

অভিযোগ রয়েছে, সদ্য ইজারা প্রাপ্তদের পূর্বের ইজারাদারের প্রায় ৭ লাখ টাকার মাছ পুকুরে থাকা অবস্থায় প্রশাসন পূর্বের ইজারাদারদের না জানিয়ে নতুন লোকদের পুকুর ইজারা দিয়েছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন জয়পুর গ্রামের মৎস্য চাষী মন্নু মোল্যা এবং স্থানীয় আকরাম হোসেন ভুইয়া। লোহাগড়া পোদ্দারপাড়া গ্রামের মৃত আজিজার রহমান ভুইয়ার ছেলে আকরাম হোসেন ভুইয়া জানান, বাজার ও মাদ্রাসা সংলগ্ন ৫একর ৮ শতক জমিতে পুকুর অবস্থিত। পুকুরপাড় সংলগ্ন উপরের অংশে সরকারি খাস জমি থাকলেও সরকার বেআইনীভাবে সম্পূর্ণ পুকুরটি খাস দাবি করে ইজারা দিয়েছে।

পুকুরটির ইজারা প্রদান কার্যক্রম স্থগিত রাখতে আকরাম হোসেনের আবেদনের প্রেক্ষিতে রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর অফিস থেকে গত ১৩ এপ্রিল ৩৭৬ নং স্মারকের নির্দেশনা মোতাবেক লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে ১৪ মে ৩৬৩ নং স্মারকে রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর অফিসে প্রতিবেদন প্রেরণ করা হয়। প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট খাস পুকুরের ইজারা কার্যক্রম সম্পর্কে বলা হয়েছে। কিন্তু বিষয়টি নিস্পত্তি করতে সংশ্লিষ্ট খাস পুকুরটির পূর্ববর্তী মালিকানা ও দেওয়ানি মামলা সংক্রান্ত তথ্যাদি প্রয়োজন।

জমির মালিকানা, হস্তান্তরের তথ্যাদি,দেওয়ানি মামলা সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ তথ্যাদিনহ পুনরায় প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য গত ৩১ মে নড়াইলের রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর এ,এফ,এম, আবু সুফিয়ান উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে ৬৩৫ সং স্বারকে পত্র দিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিস সহকারি মোঃ শরীফুল ইসলাম পত্র প্রাপ্তির কথা স্বীকার করেছেন।

গত ৫ ও ৬ জুন সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ওই পুকুরের মধ্যদিয়ে বাঁধ/বেড়া নির্মাণ করে দোকানঘর নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছে বর্তমান ইজারা প্রাপ্তরা। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করলেও প্রশাসন কাজ বন্ধে কোন ব্যবস্থা নেননি বলে ভুক্তভোগী আকরাম হোসেন অভিযোগ করেন। তিনি এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সহযোগিতা আশা করছেন।

Comments

comments