অনলাইন ডেস্ক : আসসালামু আলাইকুম, জুম্মাহ মোবারাক
আপনাদের সামনে জুম্মার ফজিলত
সম্পর্কে কিছু দলিল পবিত্র কুরআন হাদিস
তুলে ধরব। চলুন হাদীস গুলো এক
পলক দেখে আসি।
জুমু’আর দিনের মর্যাদা: হযরত আবু
লুবাবা ইবনে আবদুল মুনযির (রা:)
থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, জুমু’আর দিন
সকল দিনের সরদার। আল্লাহর নিকট
সকল দিনের চেয়ে মর্যাদাবান।
কোরবানীর দিন ও ঈদুল ফিতরের দিনের
চেয়ে বেশী মর্যাদাবান।
আবু হুরাইরা (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বলেছেন: আমরা শেষে এসেছি কিন্তু
কেয়ামতের দিন সকলের আগে থাকবো।
যদিও অন্য সকল জাতিগুলো (ইহুদী ও খৃষ্টান)
কে গ্রন্থ দেয়া হয়েছে আমাদের
পূর্বে, আমাদের গ্রন্থ
দেয়া হয়েছে তাদের পরে। অত:পর
জেনে রাখো এই (জুমার) দিনটি আল্লাহ
আমাদের দান করেছেন। তিনি এ
ব্যাপারে আমাদের সঠিক পথের
দিশা দিয়েছেন। আর অন্য লোকেরা এ
ব্যাপারে আমাদের পিছনে আছে।
ইহুদীরা জুমার পরের দিন (শনিবার) উদযাপন
করে আর খৃষ্টানেরা তার পরের দিন (রবিবার)
উদযাপন করে। (বর্ণনায়: বুখারী ও মুসলিম)
আসুন আমরা জুম্মার
দিনে আগে ভাগে মসজিদে যাই,
আমি আপনি যদি একটু
আগে ভাগে মসজিদে যাই তবে এর জন্য
অনেক ফজিলত রয়েছে।
হাদিসে আছে জুম্মার
দিনে আগে ভাগে মসজিদে গেলে দান-
খয়রাত বা পশু কুরবানী করার সমতুল্য সওয়াব
পাওয়া যায়। আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত এক
হাদীসে রাসুল (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
“যে ব্যাক্তি জু’আর দিন ফরজ গোসলের
মত গোসল করে প্রথম
দিকে মসজিদে হাজির হয়, সে যেন একটি উট
কুরবানী করল, দ্বিতীয়
সময়ে যে ব্যাক্তি মসজিদে প্রবেশ
করে সে যেন একটি গরু কুরবানী করল,
তৃতীয়
সময়ে যে ব্যাক্তি মসজিদে প্রবেশ করল
সে যেন একটি ছাগল কুরবানী করল। অতঃপর
চতুর্থ সময়ে যে ব্যাক্তি মসজিদে গেল
সে যেন একটি মুরগী কুরবানী করল। আর
পঞ্চম
সময়ে যে ব্যাক্তি মসজিদে প্রবেশ করল
সে যেন একটি ডিম কুরবানী করল। অতঃপর
ইমাম যখন
বেরিয়ে এসে মিম্বরে বসে গেলেন
খুৎবার জন্য, তখন ফেরেশতারা লেখা বন্ধ
করে খুৎবা শুনতে বসে যায়।” (বুখারীঃ ৮৮১,
ইফা ৮৩৭, আধুনিক ৮৩০)
যে ব্যাক্তি আদব রক্ষা করে জুম’আর সালাত
আদায় করে তার প্রতিটি পদক্ষেপের
বিনিময়ে তার জন্য পুরো এক বছরের
রোজা পালন এবং রাত জেগে তাহাজ্জুদ পড়ার
সমান সওয়াব লিখা হয়।
আউস বিন আউস আস সাকাফী (রাঃ)
থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: “জুমা’আর দিন
যে ব্যাক্তি গোসল করায় (অর্থাৎ সহবাস
করে, ফলে স্ত্রী ফরজ গোসল
করে এবং) নিজেও ফরজ গোসল করে,
পূর্বাহ্ণে মসজিদে আগমন
করে এবং নিজেও প্রথম
ভাগে মসজিদে গমন করে,
পায়ে হেঁটে মসজিদে যায় (অর্থাৎ কোন
কিছুতে আরোহণ করে নয়), ইমামের
কাছাকাছি গিয়ে বসে, মনোযোগ
দিয়ে খুৎবা শোনে, কোন কিছু
নিয়ে খেল তামাশা করে না; সে ব্যাক্তির
প্রতিটি পদক্ষেপের জন্য
রয়েছে বছরব্যাপী রোজা পালন ও
সারা বছর রাত জেগে ইবাদত করার সমতুল্য
সওয়াব।” (মুসনাদে আহমাদঃ ৬৯৫৪, ১৬২১৮)
আপনারা খেয়াল করলে দেখবেন
আমরা যখন মসজিদে যাই তখন সেখানে তিন
ধরনের মানুষ দেখতে পাই, যা হুজুর
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর
নিম্নোক্ত হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়: রাসুলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
“জুম’আর সালাতে তিন ধরনের লোক হাজির
হয়।
(ক) এক ধরনের লোক
আছে যারা মসজিদে প্রবেশের পর
তামাশা করে, তারা বিনিময়ে তামাশা ছাড়া কিছুই
পাবে না।
(খ) দ্বিতীয় আরেক ধরনের লোক
আছে যারা জুম’আয় হাজির হয় সেখানে দু’আ
মুনাজাত করে, ফলে আল্লাহ যাকে চান
তাকে কিছু দেন আর যাকে ইচ্ছা দেন না।
(গ) তৃতীয় প্রকার লোক হল যারা জুম’আয়
হাজির হয়, চুপচাপ থাকে, মনোযোগ
দিয়ে খুৎবা শোনে, কারও ঘাড়
ডিঙ্গিয়ে সামনে আগায় না, কাউকে কষ্ট
দেয় না, তার দুই জুম’আর মধ্যবর্তী ৭ দিন
সহ আরও তিনদিন যোগ করে মোট দশ
দিনের গুনাহ খাতা আল্লাহ তায়ালা মাফ
করে দেন।” (আবু দাউদঃ ১১১৩)
যে সকল মসলমান জুম’আর নামাজ অত্যন্ত
আদবের প্রতি লক্ষ্য রেখে আদায় করে,
সেই সকল আদায়কারীদের জন্য দুই
জুম’আর মধ্যবর্তী সময় গুনাহের
কাফফারা স্বরূপ। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “পাঁচ
বেলা সালাত আদায়, এক জুম’আ
থেকে পরবর্তী জুম’আ, এক রমজান
থেকে পরবর্তী রমজানের
মধ্যবর্তী সময়ে হয়ে যাওয়া সকল
(সগীরা) গুনাহের কাফফারা স্বরূপ, এই
শর্তে যে, বান্দা কবীরা গুনাহ
থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখবে।” (মুসলিমঃ ২৩৩)
জুমু’আর দিনে কিছু করণীয় কাজ নিচে দেয়া হলো:
1. ফজরের আগে গোসল করা।
2. ফজরের ফরজ নামাজ়ে সূরা সাজদা [সিজদা] ও সূরা দাহর/ইনসান তিলাওয়াত করা।
3. উত্তম পোষাক পরিধান করা।
4. সুগন্ধি লাগানো।
5. প্রথম ওয়াক্তে মসজিদে যাওয়া।
6. সূরা কাহফ তিলাওয়াত করা।
7. মসজিদে গিয়ে কমপক্ষে দুই রাকা’আত
সুন্নত আদায় করা।
8. ইমামের কাছাকাছি গিয়ে বসা।
9. মনযোগ দিয়ে খুৎবাহ শোনা। খুৎবাহ
চলাকালীন সময়ে কোন ধরনের
কোন কথা না বলা;
এমনকি কাউকে কথা বলতে দেখলে তাকে কথা বলতে বারণ
করাও কথা বলার শামিল।
10. দুই খুৎবাহর মাঝের সময়ে দু’আ করা।
11. অন্য সময়ে দু’আ করা। কারণ এদিন দু’আ
কবুল হয়।
12. রসূলের উপর সারাদিন
বেশী বেশী দরূদ পাঠানো।
জুমু’আর দিনের পাঁচটি বৈশিষ্ট্য:
এই দিনে আদম (আ:)-
কে সৃষ্টি করা হয়েছে।
এই দিনে আল্লাহ্ তা’আলা আদম (আ:)-
কে দুনিয়াতে নামিয়ে দিয়েছেন।
এই দিনে আদম (আ:) মৃত্যুবরণ
করেছেন।
এই দিনে এমন একটি সময় রয়েছে,
যে সময়ে হারাম ছাড়া যে কোন জিনিস
প্রার্থনা করলে আল্লাহ তা প্রদান
করেন।
এই দিনে কিয়ামত সংঘটিত হবে। তাই
আসমান, যমীন ও আল্লাহর সকল
নৈকট্যশীল ফেরেশতা জুমু’আর
দিনকে ভয় করে।
(ইবনে মাজাহ্, মুসনাদে আহমদ)
জুমার নামাযের ফযীলতঃ
জুমআর নামাজের বিশেষ ফযিলত:
উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য এটি একটি মহান
দিন। এ জুমআর দিনটিকে সম্মান করার জন্য
ইহুদী-নাসারাদের উপর ফরজ করা হয়েছিল;
কিন্তু তারা মতবিরোধ করে এই
দিনটিকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। অতঃপর
ইহুদীরা শনিবারকে আর
খ্রিষ্টানরা রবিবারকে তাদের ইবাদতের দিন
বানিয়েছিল। অবশেষে আল্লাহ তাআলা এ
উম্মতের জন্য শুক্রবারকে মহান দিবস ও
ফযীলতের দিন হিসেবে দান করেছেন।
আর উম্মতে মুহাম্মদী তা গ্রহণ
করে নিলো। [বুখারী, মুসলিম] হযরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত,
তিনি বলেন, রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন,
যে ব্যক্তি জুমআর দিন ফরজ গোসলের
মতো গোসল করে প্রথম
দিকে মসজিদে হাজির হয়,
সে যেনো একটি উট কুরবানী করলো,
দ্বিতীয়
সময়ে যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ
করে সে যেনো একটি গরু
কুরবানী করলো, তৃতীয়
সময়ে যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করল
সে যেনো একটি ছাগল
কুরবানী করলো। অতঃপর চতুর্থ
সময়ে যে ব্যক্তি মসজিদে গেল
সেযেনোএকটিমুরগীকুরবানীকরলো।
আর পঞ্চম
সময়ে যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করল
সে যেনো একটি ডিম কুরবানী করলো।
অতঃপর ইমাম যখন
বেরিয়ে এসে মিম্বরে বসে গেলেন
খুৎবার জন্য, তখন ফেরেশতারা লেখা বন্ধ
করে খুৎবা শুনতে বসে যায়। [সহীহ
বুখারী] হযরত আউস বি আউস আস সাকাফী রা.
হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সা. ইরশাদ
করেন, জুমাআর দিন যে ব্যক্তি গোসল
করে প্রথম ভাগে মসজিদে গমন করে,
পায়ে হেঁটে মসজিদে যায় (অর্থাৎ
কোনো কিছুতে আরোহণ করে নয়),
ইমামের কাছাকাছি গিয়ে বসে, মনোযোগ
দিয়ে খুৎবা শোনে, কোনো কিছু
নিয়ে খেল তামাশা করে না; সে ব্যক্তির
প্রতিটি পদক্ষেপের জন্য
রয়েছে বছরব্যাপী রোজা পালন ও
সারা বছর রাত জেগে ইবাদত করার সমতুল্য
সওয়াব। [মুসনাদে আহমাদ] রাসূল সা. ইরশাদ করেন, জুমআর সালাতে তিন
ধরণের লোক হাজির হয়,
১. এক ধরণের লোক
আছে যারা মসজিদে প্রবেশের পর
তামাশা করে, তারা বিনিময়ে তামাশা ছাড়া কিছুই
পাবে না।
২. দ্বিতীয় আরেক ধরণের লোক
আছে যারা জুমআয় হাজির হয় সেখানে দু’আ
মুনাজাত করে, ফলে আল্লাহ যাকে চান
তাকে কিছু দেন আর যাকে ইচ্ছা দেন না।
৩. তৃতীয় প্রকার লোক
হলো যারা জুমআয় হাজির হয়, চুপচাপ থাকে,
মনোযোগ দিয়ে খুৎবা শোনে, কারও
ঘাড় ডিঙ্গিয়ে সামনে আগায় না, কাউকে কষ্ট
দেয় না, তার দুই জুম’আর মধ্যবর্তী ৭ দিন
সহ আরও তিন দিন যোগ করে মোট দশ
দিনের গুনাহ খাতা আল্লাহ্ তাআলা মাফ
করে দেন। [সুনানে আবু দাউদ]
Comments
comments