অনলাইন ডেস্কঃ আজ পহেলা ডিসেম্বর । বাঙালির গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মাসের শুরু। একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর এসেছিল বিজয়ের সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে গৌরবগাঁথা দিন। সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ শেষে চূড়ান্ত বিজয়।
১৯৭১ সালের এই মাসে বাঙালি জাতির জীবনে নিয়ে এসেছিল এক মহান অর্জনের আনন্দ। ওই বছরের ১৬ই ডিসেম্বর পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয় প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। বিশ্বের বুকে রচিত হয় এক নতুন ইতিহাস। বাংলাদেশ নামে মানচিত্র রচনা করার ইতিহাস। পাকিস্তানিদের দ্বারা সুদীর্ঘ ২৩ বছরের শোষণ, বঞ্চনা আর অত্যাচার-নির্যাতনের সমাপ্তি ঘটে ১৬ই ডিসেম্বরে। এবার ১৬ই ডিসেম্বরে পালিত হবে স্বাধীনতার ৪৫তম বার্ষিকী।
১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর। স্বাধীনতার মহান স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে কারান্তরীণ করে হানাদার বাহিনী। শুরু হয় ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ইতিহাসের নৃশংস হত্যাযজ্ঞ। এরপরই শুরু হয় মুক্তিযোদ্ধাদের পাল্টা প্রতিরোধ। দেশকে স্বাধীন ও মুক্ত করার যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে বিভিন্ন বয়সী শ্রেণি-পেশার নারী-পুরুষ। ডিসেম্বরে বিজয়ের শেষ সময়ে এসে পিছু হটতে থাকে হানাদার বাহিনী।
একপর্যায়ে পাকিস্তানি বাহিনী দেশকে মেধাশূন্য করতে তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার-আলবদর-আল শামসদের সহযোগিতায় এ দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যায় মেতে ওঠে। তাই বুদ্ধিজীবীদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে প্রতি বছরের ১৪ই ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যা দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধের শেষ সময়ে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেও শেষ রক্ষা হয়নি হানাদারদের। শেষ পর্যন্ত ১৬ই ডিসেম্বরেই পর্যুদস্ত হতে হয় তাদের। ৯ মাস যুদ্ধ শেষে ৩০ লাখ শহীদের রক্ত ও ২ লাখ নারীর সম্ভ্রমের বিনিময়ে ১৬ই ডিসেম্বর আসে মুক্তির স্বাদ।
বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধের অবিস্মরণীয় গৌরবদীপ্ত চূড়ান্ত বিজয় এ মাসের ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয়। স্বাধীন জাতি হিসেবে সমগ্র বিশ্বে আত্মপরিচয় লাভ করে বাঙালিরা। অর্জন করে নিজস্ব ভূ-খণ্ড আর সবুজের বুকে লাল সূর্যখচিত নিজস্ব জাতীয় পতাকা। ভাষার ভিত্তিতে যে জাতীয়তাবাদ গড়ে উঠেছিল, এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে ঘোষিত স্বাধীনতা পূর্ণতা পায় এ দিনে।
Comments
comments