অনলাইন ডেস্ক: সমাজে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় পুরুষের মানসিকতা পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, বিশ্বে একটি সমৃদ্ধ দেশ হিসাবে বাংলাদেশকে গড়ার জন্য নারী ও পুরুষের যৌথ প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, সমাজে নারীর উন্নয়নে অনেক অগ্রগতি হয়েছে, তবে তাদের অধিকার এখনো পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এ কারনে আমাদের বিশেষ করে পুরুষদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। তিনি আজ এখানে লালমাটিয়া মহিলা কলেজের দু’দিন ব্যাপী সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি ভাষা আন্দোলন, গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে নারীর ভূমিকার উল্লেখ করে বলেন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তিযুদ্ধের আহবানের পর নারীরা বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীরা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করেছিলেন। এরপর মুক্তি যুদ্ধ শুরুর পর অনেক নারী যুদ্ধে অংশ নেন। অনেক নারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সহায়তার হাত প্রসারিত করেন। যুদ্ধের সময়ে অনেক নারী নির্যাতনের শিকার হন। জাতি মুক্তিযুদ্ধে নারীদের এই অবদান শ্রদ্ধার সাথে স্মরন রাখবে।
হামিদ বলেন, এখন দেশে বিদেশে নারীর উন্নয়ন হচ্ছে। তাদের উপস্থিতি এখন রাজনীতি, অর্থনীতি এবং শিল্প সংস্কৃতি ও খেলাধূলাসহ সর্বত্র লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা এবং মন্ত্রিসভায় নারী সদস্যরাই কেবল মাত্র নারীর ক্ষমতায়নে একমাত্র উদাহরন নয়, তারা তদের মেধা, দক্ষতা, সাহস দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রপতি বলেন, এমনকি বিচার বিভাগ, প্রশাসন ও সশস্ত্র বাহিনীর মতো চ্যালেঞ্জিং পেশায়ও তারা দক্ষতা ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বর্তমান সরকার নারী শিক্ষা বিস্তারে এবং তাদের ক্ষমতায়নে বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছে। জাতিসংঘ নারীর ক্ষমতায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ ভূমিকার জন্য তাকে প্লানেট প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন অ্যাওর্য়াড এবং এজেন্ট অব চেঞ্জ অ্যাওর্য়াড প্রদান করেছে।
তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে বলেন, এই অর্জণ এবং সম্মানিত প্রধানমন্ত্রীর স্বীকৃতি ভবিষ্যতে এগিয়ে যেতে আমাদেরকে আরো উৎসাহিত করবে। রাষ্ট্রপতি জাতীয় জীবনে নারী শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, একজন শিক্ষিতা মা একটি ভাল সমাজ গড়তে পারে। একটি জাতি নারী পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে উন্নয়নের শিখরে পৌছুতে পারে।
আবদুল হামিদ লালমাটিয়া মহিলা কলেজ জাতীয় করনে শিক্ষার্থীদের দাবী সম্পর্কে বলেন, আমি একজন রাষ্ট্রপতি, সরকার নই। আমি এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাবো। রাষ্ট্রপতি পরে কলেজ শিক্ষার্থীদের একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে কলেজ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য জাহাঙ্গির কবির নানক, শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসেন, জাতীয় বিশ্বদ্যিালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হারুন অর রশীদ এবং কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।
Comments
comments