অনলাইন ডেস্ক: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, পুলিশ সদস্যদের সুযোগ-সুবিধা এবং সক্ষমতা বাড়াতে সরকার যথেষ্ট আন্তরিক। তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশকে যুগোপযোগী এবং আরও আধুনিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে বর্তমান সরকার কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
‘পুলিশ মেমোরিয়াল ডে’ উপলক্ষে রাজধানীর মিরপুরে পুলিশ স্টাফ কলেজের পিএসসি কনভেনশন হলে ২০১৬ সালে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারবর্গকে সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আজ এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক সভাপতিত্ব করেন। অতিরিক্ত আইজিপি (এইচআরএম) মো. মইনুর রহমান চৌধুরী স্বাগত বক্তব্য রাখেন ।
অতিরিক্ত আইজিপি ফাতেমা বেগম, এসবি’র অতিরিক্ত আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, সিআইডির অতিরিক্ত আইজিপি শেখ হিমায়েত হোসেন, অতিরিক্ত আইজিপি মো. মোখলেসুর রহমান, ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, এপিবিএন’র অতিরিক্ত আইজিপি সিদ্দিকুর রহমান, রেলওয়ে রেঞ্জের অতিরিক্ত আইজিপি মো. আবুল কাশেম, ঢাকাস্থ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানগণ, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ এবং কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারবর্গ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করে থাকে। পুলিশ বাহিনী আছে বলেই জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা করা সম্ভব হচ্ছে। তিনি বলেন, কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত পুলিশ সদস্যরা দেশের জন্য, জনগণের জন্য আত্মাহুতি দিয়েছেন। দেশ ও জনগণের প্রতি ভালবাসা এবং দায়িত্ববোধের কারণেই তারা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তারা দেশের গর্ব, পুলিশ বাহিনীর গর্ব।
আইজিপি বলেন, কর্তব্য পালন করতে গিয়ে প্রতি বছর অনেক পুলিশ সদস্য নিহত হন। দায়িত্ব পালনকালে তারা আত্মত্যাগের যে মহান দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন, তা পুলিশ বাহিনীর জন্য অত্যন্ত গৌরব ও সম্মানের। তিনি বলেন, এখন থেকে প্রতিবছর ১ মার্চ দেশব্যাপী সকল পুলিশ ইউনিটে ‘পুলিশ মেমোরিয়াল ডে’ পালন করা হবে। নিহত পুলিশ সদস্যদের স্বজনদের উদ্দেশ্যে আইজিপি বলেন, আপনাদের খোঁজ খবর রাখা, পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব। তিনি নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারবর্গকেপ্রয়োজনে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন অথবা পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের কল্যাণ শাখায় যোগাযোগ করার অনুরোধ জানান।
অতিরিক্ত আইজিপি (এইচআরএম) মো. মইনুর রহমান চৌধুরী বলেন, ১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর থেকে যেসব পুলিশ সদস্য কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত হয়েছেন তাদের স্মরণেই ‘পুলিশ মেমোরিয়াল ডে’ পালন করা হচ্ছে। এদিকে নিহত পুলিশ সদস্যদের স্মরণে আজ দেশের সকল পুলিশ ইউনিটে প্রথমবারের মত ‘পুলিশ মেমোরিয়াল ডে’ পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায়, রেঞ্জ ও জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে পুলিশ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা, কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারবর্গকে সম্মাননা প্রদান। রাজধানীর মিরপুরে পুলিশ স্টাফ কলেজে (পিএসসি) দিবসটি পালন করা হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন এমপি এবং বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক আজ বুধবার সকালে রাজধানীর মিরপুরে পুলিশ স্টাফ কলেজে নির্মিত অস্থায়ী পুলিশ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু করেন। এ সময় তাদেরকে একটি চৌকস পুলিশ দল সশস্ত্র সালাম প্রদান করে, বিউগলে বাজানো হয় করুণ সুর। নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারের সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমন এবং অপরাধীদের গ্রেফতারসহ দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিধানকালে ২০১৬ সালে কর্তব্যরত অবস্থায় ১২৮ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়। গত ২৫ বছরে কর্তব্যরত অবস্থায় ১ হাজার ১৩৯ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন ।
Comments
comments