Download Free BIGtheme.net
Home / প্রবাসে বাংলাদেশ / মিশরে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের অনন্য মিলন মেলা

মিশরে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের অনন্য মিলন মেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক: মিশর বললেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে উঠে পিরামিড আর ফেরাউনের গল্প। বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় শিক্ষার্থীরা মিশরে পড়াশোনা করতে আসছে। মিশর সরকারের সহজ স্কলারশীপ ও শিক্ষানীতি , যুগোপযোগী পড়াশোনার মান এবং সহনীয় জীবন যাত্রা ব্যয়ের কারনে শিক্ষাক্ষেত্রে বাংলাদেশী ছাত্রদের নতুন গন্তব্য হয়ে উঠছে নীল নদের দেশ মিশর। ইদানিং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিকেল ও ইন্জিনিয়ারিং বিভাগে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা সফলতার সাথে পড়াশোনা করছে।

বিগত দিনগুলোতে মিশরে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের বড় কোন রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন প্রকাশ্যে ছিল না। গত পহেলা বৈশাখের দিন বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশীদের উপস্থিতিতে ডাঃ মোঃ শাফায়েত উল্লাহর নেতৃত্বে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মিশর শাখা আন্তঃপ্রকাশ করে। সংখ্যা গরিষ্ঠ ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের অনুসারী শিক্ষার্থীদের মাঝখানে ছাত্রলীগের একটি শাখা কিভাবে টিকবে বা চলবে তা মিশর প্রবাসীদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।

সময়ের সাথে সাথে ডাঃ মোঃ শাফায়েত উল্লাহর বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও যুগোপোযোগী কর্মপরিকল্পনা মিশরে ছাত্রলীগকে একটি শক্ত ভিত্তির উপর দ্বার করিয়েছে। ছাত্রলীগের অংশগ্রহনে প্রবাসী মেডিকেল শিক্ষার্থীদের নিয়ে গড়া “ ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ” মিশর প্রবাসীদের মাঝে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই মেডিকেল ক্যাম্প মিশরের প্রতিটি প্রদেশে নিয়মিত আয়োজিত হচ্ছে। ভাষা ও ভিসা সমস্যার জন্য মিশরে প্রবাসী বাংলাদেশীরা এতদিন মৌলিক চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল। এই মেডিকেল ক্যাম্প সকলের মাঝে আশার আলো হিসাবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।

ছাত্রলীগ গঠনের বিষয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মিশর শাখার সভাপতি ডাঃ মোঃ শাফায়েত উল্লাহ বলেন “ মিশরে আমরা আসলে পড়াশোনা করতেই এসেছি। কিন্তু এখানে আসার পর দেখলাম সাধারন শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন কারনে অনেক হয়রানির শিকার হয়ে আসছে। আমার মত যেসব শিক্ষার্থী সাধারন ছাত্র এবং কোন ধর্ম ভিত্তিক দলের অনুসারী নয় তারা এখানে বিভিন্ন সমস্যার সম্মূখীন হয়। কোন সংগঠনই তাদের দায়ীত্ব নিতে চায় না। আমি বাংলাদেশে থাকাকালীন ছাত্রলীগের সাথে জড়িত ছিলাম। দেশে সুনামের সাথে রাজনীতি করেছি। আমি যখন এখানে ছাত্রলীগের ডাক দিলাম, তখন অনেক অবহেলিত ছাত্র আমার ডাকে সারা দিয়েছে। এরাই আমাদের শক্তি। বঙ্গবন্ধু যেমন নিপীরিত মানুষের নেতা ছিলেন, আমিও সেই মহান নেতার মত এই সকল শিক্ষার্থীদের পাশে দাড়াতে চাই । আমি বিশ্বাস করি এই ছাত্রলীগ মিশরে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের এক মিলন মেলা ও সফলতার সহায়ক বন্ধু হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হবে। জ্ঞানের সাথে মানবিক কাজে ছাত্রলীগ হবে নিবেদিত প্রান।

মিশর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ.জি.এম. সাইদুল হক সুমন ভাই প্রবাসীদের চিকিৎসা সমস্যার কথা যখন ব্যক্ত করলেন তখন একজন রেজিস্ট্রার্ড ডাক্তার হিসেবে আর বসে থাকতে পারি নি। বলাবাহুল্য যে, এখানে ছাত্রলীগের আহবায়ক কমিটি গঠনে তার সাহসী ভূমিকা ছাত্রলীগ কোন দিন ভুলবে না। মিশরে বসবাসরত অন্যান্য ডাক্তারদের সাথে আমিও ছাত্রলীগ নিয়ে মেডিকেল ক্যাম্পে অংশগ্রহন করি। ছাত্রলীগের সাহসী কর্মীরা বাধা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে ক্যাম্পকে ধর্ম-মত-দল নির্বিশেষে মিশরে বসবাসরত সকল প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছে পৌছে দিচ্ছে। ছাত্রলীগের একমাত্র লক্ষ্যই হবে অর্জিত জ্ঞান ব্যবহার করে শিক্ষার্থীসহ সাধারন মানুষের সেবা করা । তাই ছাত্র সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগের কাজই হবে মানব সেবা। আমরা ইতি মধ্যেই শিক্ষার্থীদের জন্য বেশ কিছু যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছি যার ফলাফল খুব দ্রুতই শিক্ষার্থীরা পাবে ইনশাআল্লাহ।”

মিশরের ছাত্রলীগ গঠন করা হয়েছে নিয়মিত ছাত্রদের নিয়ে। ছাত্রলীগের সংবিধান শক্তভাবে মেনে চলা হচ্ছে। তবে ছাত্রলীগ নিয়ে প্রবাসীদের মাঝে মিশ্র মতামত রয়েছে। সকলেই একবাক্যে বলছে মানবতার জন্য কাজ করলে দল মত নির্বিশেষে সবাই ছাত্রলীগকে সমর্থন করবে। সবাই আশা করে মিশরে ছাত্রলীগ কোন বিতর্কিত কাজে জড়াবে না এবং সত্যিকারের ছাত্র রাজনীতির চর্চা করবে।

Comments

comments