মোঃ আরিফ জাওয়াদ, দিনাজপুর: দিনাজপুরে আব্দুল লতিফ (৭০) [মুক্তিবার্তা নম্বর ০৩০৮১০৬৮৬, ভোটার নম্বর ৮৩৪] নামে এক মুক্তিযোদ্ধাকে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফনের ঘটনা ঘটেছে। লতিফ দিনাজপুর শহরের নিমনগর বালুবাড়ি এলাকার মৃত তমিজ উদ্দিন সরকারের ছেলে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতায় এ ঘটনা ঘটেছে ; লাশ উত্তোলন করে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান অক্ষুণ্ন রাখার জন্য অহ্বান জানান, মুক্তিযোদ্ধার ছেলে মমিনুল ইসলাম ।
এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফের ছেলে মমিনুল ইসলাম মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।
জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধা সম্মানিভাতা উত্তোলন করে ফেরার পথে ৪ঠা সেপ্টেম্বর (রবিবার) সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন তার বাবা। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৫ই সেপ্টেম্বর (সোমবার) তিনি মারা যান।
দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, মুক্তিযোদ্ধা সেবাকেন্দ্র ও থানা জেলা কমান্ডারকে অবহিত না করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে পুলিশ আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে দিনাজপুর শহরের ফরিদপুর গোরস্থানে দাফন করে।
মমিনুল জানায়, “তার মৃত্যুর পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভাতার বইটির মাধ্যমে পরিচয় জানার পরও বেওয়ারিশ হিসেবে লাশ কি ভাবে দাফন করে?”
মমিনুল আরো জানায়, বিষয়টি জানার পর কোতোয়ালি থানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে পুলিশ মুক্তিযোদ্ধা সম্মানি ভাতার বই এবং ১৭ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে ১২ হাজার টাকা ফেরত দেয়। বাকি টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা জানান ৫ হাজার ২০০ টাকা দাফন-কাফনের জন্য খরচ হয়েছে।
দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, হাসপাতাল থেকে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারকে জানানো হয়েছিল, কিন্তু তিনি আব্দুল লতিফের পরিচয় নিশ্চিত করতে এগিয়ে আসেন নি।
তিনি আরো জানান, এরপরও অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ডা. আমীর আলীকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সিদ্দিক গজনবী অস্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে তাদেরকে কেউ কোনো কিছু জানায়নি।
জেলা প্রশাসক খায়রুল আলম জানায়, জেলা প্রশাসন বিষয়টি তদন্ত করতে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট গোলাম রাব্বিকে প্রধান করে গঠিত ওই কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে, বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
Comments
comments