জেলা প্রতিনিধি: গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার হাবিবপুর এলাকায় চাঁদনী আক্তার (১৬) নামে এক এইচএসসি পরীক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তার লাশ ফেলে মা ও মায়ের দ্বিতীয় স্বামী পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে এলাকাবাসী কৌশলে তাদের আটকে রাখে। সোমবার বিকেলে থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছেন। কালিয়াকৈর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মুক্তি মাহমুদ লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত চাঁদনী ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানার তেলজুরী গ্রামের মিলু শেখের মেয়ে। সে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রাস্থ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারী কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে ২০১৭ সালের এইচ এস সি পরীক্ষার্থী।
এলাকাবাসী জানান, ৬/৭ বছর আগে বেলাল হোসেন তার স্ত্রী জোসনা বেগমকে নিয়ে হাবিবপুর এলাকায় বনের জমিতে বসতি ঘরে তুলেন। বছর দুইয়েক আগে বেলাল হোসেন চাঁদনীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করলে জোসনা কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে। তখন এলাকাবাসী জানতে পারে চাঁদনী জোসনার প্রথম ঘরের সন্তান। পরে স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়।
কিছুদিন আগে স্থানীয় শাকিল নামে এক যুবকের সাথে চাঁদনীর প্রেমের সর্ম্পক হয়। এনিয়ে চাঁদনীর সাথে তিন/চারদিন যাবৎ মায়ের ঝগড়া চলছিল।
চাঁদনীর মা জোসনা বেগম জানান, সোমবার সকাল ৯টার দিকে এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে মেয়েকে বকাঝকা করেন। আর এ অভিমানে চাঁদনী তার পড়ার ঘরে দিয়ে ঘরের আড়ার সাথে ওরনা পেচিয়ে আত্মহত্যার করে। এক পর্যায়ে জোসনা বেগম ও তার ছেলে ঘরের ভিতরে গিয়ে তাকে নিচে নামিয়ে হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা করে। ঘর থেকে বের করার সাথে সাথেই তার মৃত্যু হয়।
ঘটনার পর থেকে জোসনা বেগমের স্বামী বেলাল হোসেন ও চাঁদনীর প্রেমিক শাকিল হোসেন পলাতক রয়েছেন।
এলাকাবাসী আজিজুল হক, সেলিম হোসেন, নুরুল ইসলামসহ অনেকই বলেছেন, চাঁদনী মারা যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী তাদের বাড়ী যায়। এলাকাবাসীর উপস্থিতিটের পেয়ে লাশ ফেলে বাড়ীর সবাই পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এলাকাবাসী তাদের কৌশলে বাড়ীতে ডেকে আনলেও এক পর্যায়ে বেলাল পালিয়ে যায়। পুলিশ এলাকাবাসীর খবরের ভিত্তিতে থানা পুলিশ সোমবার বিকেল ৪টার দিকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
কালিয়াকৈর থানার ওসি তদন্ত মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জানান, থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যা।
Comments
comments