অনলাইন ডেস্ক: ভারতের পশ্চিমবঙ্গে গ্রেফতার জেএমবি সদস্য আনোয়ার হোসেন ফারুকই ত্রিশালে পুলিশ হত্যা করে প্রিজন ভ্যান থেকে জঙ্গি ছিনতাইয়ের হোতা বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যে ফারুকের নাম আপনার বলেছেন, সে ফারুক আমাদের কাছে মোস্ট ওয়ান্টেড। যদি সত্যিই সে ফারুক হয়ে থাকেন তাহলে আপনাদের মনে আছে নিশ্চই, ২০১৪ সালে ময়মনসিংহের ত্রিশালে এক পুলিশ সদস্যকে হত্যা করে প্রিজন ভ্যান থেকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার যে ঘটনা ঘটেছিল তার হোতা ছিল ফারুক। তার বিরুদ্ধে চার্জশিটও হয়েছে।
আসাদুজ্জামান কামাল বলেন, ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ফারুক হোসেন ও জামাই ফারুক হিসেবে পরিচিত ওই জঙ্গির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। তাকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য ৩০ লাখ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের একটা বন্দী বিনিময় চুক্তি আছে। যারা ওয়ারেন্টভূক্ত আসামি তাদের ফেরত দেওয়া-নেওয়া বিষয়ে। যতটুকু জানতে পেরেছি ফারুকই ধরা পড়েছে। তবে অফিসিয়ালি এখনো আমাদের কেউ কিছু জানায়নি, জানতে আরও সময় লাগবে।
ভারতীয় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, আনোয়ার হোসেন ফারুক ওরফে ইনাম জেএমবির পশ্চিমবঙ্গ শাখার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বনগাঁওয়ের বাগদা রোড থেকে রোববার তাকে আটক করে পুলিশ।
ওই ছয়জনের কাছ থেকে বিস্ফোরক, ডেটোনেটর, জাল পরিচয়পত্র, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন এবং বাংলাদেশি ও ভারতীয় মুদ্রা পাওয়া গেছে বলেও জানানো হয় কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে।
২০১৩ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ত্রিশালের সাইনবোর্ড এলাকায় প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে পুলিশ হত্যা করে জেএমবির শুরা সদস্য রাকিবুল হাসান ও সালাউদ্দিন সালেহীন ওরফে সানি (৩৮) এবং বোমা বিশেষজ্ঞ মিজানকে (৩৫) ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
পালানোর পথে ওইদিনই মির্জাপুরে গ্রেপ্তার হন রাকিবুল হাসান। পরে পুলিশের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন তিনি। বাকি দুজনের কোনো খোঁজ না পেয়ে বাংলাদেশের পুলিশ তাদের ধরিয়ে দেয়ার জন্য পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে।
পরের বছর বর্ধমানে বিস্ফোরণের ঘটনায় জেএমবির নাম আসার পর তদন্ত করতে ঢাকায় আসে ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ- এর একটি প্রতিনিধি দল। সে সময় বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে সন্দেহভাজনদের নামের একটি তালিকা দেন তারা, যাতে সানি, মিজান ও ফারুকের নামও আসে।
গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা সে সময় বলেছিলেন, জেএমবির একটি অংশের নেতা মাওলানা সাঈদুর রহমান কারাগারে থাকায় ওই অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন ‘জামাই ফারুক’। তিনিই ত্রিশালে জঙ্গী ছিনতাইয়ের মূল পরিকল্পনায় ছিলেন বলে পুলিশের সন্দেহের কথাও বলা হয় সে সময়।
কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্স শনি ও রোববার পশ্চিমবঙ্গ এবং আসাম থেকে ফারুকসহ সন্দেহভাজন ছয়জনকে গ্রেফতার করে। যাদের মধ্যে ৪জন ২০১৪ সালে বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি রয়েছে।
এসময় তাদের কাছ থেকে বিস্ফোরক, ডেটোনেটর, জাল পরিচয়পত্র, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন এবং বাংলাদেশি ও ভারতীয় মুদ্রা পাওয়া গেছে বলেও জানানো হয় কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে।
Comments
comments