অনলাইন ডেস্ক : জাতীয় ট্যাক্স কার্ডের সংখ্যা ২০ থেকে ১২৫ উন্নীতের একটি সংশোধনী প্রস্তাব আজ মন্ত্রী সভায় অনুমোদিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বাংলাদেশ সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে ‘জাতীয় ট্যাক্স কার্ড পলিসি-২০১০ (সংশোধনী)’ শীর্ষক এ প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়।
মন্ত্রী সভার নিয়মিত এই সাপ্তাহিক বৈঠক শেষে মন্ত্রী পরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, নতুন নীতিমালায় জাতীয় ট্যাক্স কার্ডের সংখ্যা ২০ থেকে ১২৫ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। রাষ্ট্রের সকল পর্যায়ে রাজস্ববান্ধব সংস্কৃতি গড়ে তুলতে অধিকসংখ্যক সর্বোচ্চ করদাতা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ট্যাক্স কার্ড প্রদানের লক্ষ্যে এ সংশোধনীর প্রস্তাব করা হয়েছে।
বর্তমান প্রতিবছর সর্বোচ্চ করদাতা ১০ ব্যক্তি ও ১০ প্রতিষ্ঠানকে এই কার্ড দেয়া হয়। নতুন নীতিমালায় ৬৪ ব্যক্তি, ৫০ কোম্পানী ও অন্যান্য ১১টি কার্ড দেয়া হবে। এর মধ্যে ব্যক্তি পর্যায়ে ৫ জন জ্যেষ্ঠ নাগরিক (সিনিয়র সিটিজেন) ৫ যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, দু’জন প্রতিবন্ধী, ৫ নারী ও তরুণ প্রজন্মের ৩ করদাতাকে বিশেষ শ্রেণীতে জাতীয় ট্যাক্স কার্ড দেয়া হবে।
সচিব বলেন, ব্যক্তি পর্যায়ে আয়ের উৎসে ৫ ব্যবসায়ী, ৫ বেতন গ্রহীতা, ৫ চিকিৎসক, ৩ সাংবাদিক, ৩ আইনজীবী, ৩ প্রকৌশলী, ২ স্থপতি, ২ হিসাবরক্ষক, ৭ নতুন করদাতা, ২ খেলোয়াড়, ২ অভিনেতা ও অভিনেত্রী, ২ শিল্পী ও গায়ক এবং অপর ৩ জনকে এ কার্ড দেয়া হবে। কোম্পানী পর্যায়ে ৪ ব্যাংক, ১ টেলিকম কোম্পানী, ৩ প্রকৌশল প্রতিষ্ঠান, ৩ খাদ্য ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, ৩ জ্বালানি কোম্পানী, ৩ পাট, ৫ স্পিনিং কোম্পানী, ৪ ওষুধ কোম্পানী, ৪ মুদ্রণ ও বৈদ্যুতিক প্রতিষ্ঠান, ৩ আবাসন কোম্পানী, ৭ তৈরি পোশাক কোম্পানী, ২ চামড়া শিল্প কোম্পানী, অপর ৪টি এ কার্ড পাবে। অন্যান্য খাতে ৪ ফার্ম, ১ স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও স্বতন্ত্র সংস্থাকে জাতীয় ট্যাক্স কার্ড দেয়া হবে।
আলম বলেন, এ প্রয়োজনে জাতীয় ট্যাক্স কার্ডের সংখ্যা বাড়াতে অর্থমন্ত্রীকে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে পরামর্শ করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।
আলম বলেন, গম ও ভূট্টার উন্নয়ন ও উৎপাদন সংক্রান্ত বিষয়ে নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে মন্ত্রিসভা আজ “বাংলাদেশ গম ও ভূট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউ আইন-২০১৬” এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে। নতুন খসড়া আইনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, ইনস্টিটিউট গম ও ভূট্টার উন্নয়ন ও উৎপাদন সংক্রান্ত বিষয়ে নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করবে এবং গবেষণা কর্মকান্ড পরিচালনা করবে।
তিনি আরো বলেন, দেশে গম ও ভূট্টার উৎপাদন বৃদ্ধিতে আধুনিক সুযোগ সুবিধাসহ গবেষণা ল্যাবরেটরি, খামার ও অবকাঠামো নির্মাণে একটি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করবে। পাশাপাশি ইনস্টিটিউট জার্ম প্রাণরস সংগ্রহ ও সংরক্ষন করবে এবং গম ও ভূট্টা উৎপাদনে চাষিদেরকে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান ও এ ব্যাপারে তাদেরকে যথাযথ প্রশিক্ষন দেবে।
মান্ত্রি পরিষদ সচিব বলেন, ইনস্টিটিউট গম ও ভূট্টা উৎপাদনে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় ভূমিকা রাখবে এবং এ বিষয়ে ইনটেলেকচ্যুয়াল প্রপার্টি অধিকার সংরক্ষণ করবে। আলম ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক কাঠামো সম্পর্কে বলন, চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একটি বোর্ড গঠিত হবে এবং সরকার ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালককে নিয়োগ দেবে।
বোর্ডের সদস্যরা হবেন, কৃষি ও অর্থ মন্ত্রনালয় থেকে একজন করে, ইনস্টিটিউট থেকে দু’জন বিজ্ঞানী, সরকার নিয়োগকৃত দু’জন বিশেষজ্ঞ বিজ্ঞানী, কৃষি কাজে সম্পৃক্ত, এমন দু’জন প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ কটন ডেভলোপমেন্ট বোর্ডের একজন প্রতিনিধি। পাশাপাশি বোর্ডে বিসিএসআইআর এর একজন প্রতিনিধি, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের একজন প্রতিনিধি এবং কৃষকের একজন প্রতিনিধি এবং কৃষি গবেষণা কাজে জড়িত এমন একটি বেসরকারি সংস্থার একজন প্রতিনিধিও বোর্ডের সদস্য থাকবেন।
বোর্ডের চেয়ারম্যান ইনস্টিটিউটের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন। বছরে বোর্ডের কমপক্ষে তিনটি সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় বোর্ডের মোট সদস্যদের মধ্যে ৫০ ভাগের উপস্থিতিতে কোরাম পূরণ হবে।
আলম বলেন, মন্ত্রিসভা বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি গবেষণা কর্মকান্ড বৃদ্ধির লক্ষ্যে ”বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট আইন-২০১৬” এর খসড়াও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে।
তিনি বলেন, খসড়াটি বিগত বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট আইন-২০১৬ বাংলায় অনুদিত। এতে বলা হয়েছে, প্রয়োজনে দেশের অন্যান্য স্থানে ইনস্টিটিউটের শাখা খোলার সুযোগ রাখা হয়েছে।
আলম বলেন, পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে পাটের উন্নয়ন ও উৎপাদনে প্রয়োজনীয় গবেষণা চালাতে দিকনির্দেশনা প্রণয়ন অনুমোদন করবে।
তিনি বলেন, ইনস্টিটিউট জলবায়ু সহিষ্ণু নতুন জাত আবিষ্কার এবং চাষিদেরকে প্রয়োজনীয় তথ্য ও প্রযুক্তি প্রদানে কৃষি সেক্টরে আইসিটি প্রয়োগ করবে।
ইনস্টিটিউট বিভিন্ন জাতের শষ্যের ওপর প্রদশর্নী, নতুন শষ্যের ওপর বাষির্ক প্রতিবেদন ও প্রচারপত্র প্রকাশ করবে এবং গবেষকদের ও কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও পোস্ট গ্রাজুয়েট গবেষণার সুযোগ দেবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মন্ত্রিসভা বাংলাদেশের ডি-৮ চার্টারের অনুমোদনের একটি প্রস্তাবও অনুমোদন করেছে।
তিনি বলেন, রোববার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ষ্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ও শেষ ফাইনাল টেস্টে ঐতিহাসিক বিজয়ের জন্য বৈঠকে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্রিকেট টীমের খেলোয়াড়, কোচ এবং বিসিবির কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানিয়ে একটি ধন্যবাদ প্রস্তাব গৃহীত হয়।
Comments
comments