অনলাইন ডেস্কঃ সেনা-নৌ-বিমানবাহিনী প্রধানদের জন্য প্রতিরক্ষা বাহিনীপ্রধান (নিয়োগ, অবসর, বেতন ও ভাতাদি) আইন ২০১৬র খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। রাষ্ট্রপতি বাহিনীপ্রধানদের সর্বোচ্চ চার বছরের জন্য নিয়োগ দেবেন বলে আইনে প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজ সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। এ ছাড়া দশম জাতীয় সংসদের ২০১৭ সালের প্রথম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদসচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, সংবিধানের ৬১ থেকে ৬৩ অনুচ্ছেদে বলা আছে সংসদ আইন প্রণয়নের মাধ্যমে প্রতিরক্ষা বাহিনীগুলোর প্রধানদের নিয়োগ ও বেতন-ভাতা নির্ধারণ করবে।
তিনি বলেন, যেহেতু সংবিধানে বলা আছে ৪৪ বছরে কোনো আইন হয়নি এ জন্য আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে জয়েন্ট সার্ভিসেস ইন্সট্রাকশন (জেএসআই) নামে একটা নির্দেশাবলী দিয়ে এসব কাজ হচ্ছে। তিন বাহিনীর প্রধানদের রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দেবেন জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদসচিব বলেন, জনস্বার্থে অবসর না দেওয়া হয় বা বাহিনীপ্রধান স্বেচ্ছায় অবসর না নেন তাহলে একসঙ্গে বা বর্ধিতকরণসহ সর্বোচ্চ চার বছরের জন্য নিয়োগ দিতে পারবেন। এর আগে জেএসআইতে তিন বাহিনী প্রধানের চাকরিকাল নির্ধারণ করা ছিল না বলেও জানান শফিউল আলম।
তিনি বলেন, বাহিনীর প্রধানদের চাকরির বয়স থাকুক আর নাই থাকুক, যোগ দেওয়ার পর মেয়াদ চার বছর থাকবে। চাকরি থাকলে মাইনাস ধরে নেন, সব মিলিয়ে চার বছর। চাকরি এক বছর থাকা অবস্থায় কেউ কোনো প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান পদে নিয়োগ পেলে তিনি সরকারের ইচ্ছায় আরও তিন বছর সময় পেতে পারেন বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদসচিব। তিনি বলেন, জনস্বার্থে পূর্বেই অবসরের আদেশ প্রদান না করলে বা বাহিনীপ্রধান স্বেচ্ছায় মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার আগেই অবসর না নিলে বাহিনীপ্রধানের নিয়োগের মেয়াদ একসঙ্গে বা বর্ধিতকরণসহ নিয়োগের তারিখ থেকে অনূর্ধ্ব চার বছর হবে।
নতুন আইনে তিন বাহিনীর প্রধানদের জন্য মন্ত্রিপরিষদসচিবের সমান অর্থাৎ ৮৬ হাজার টাকা মূল বেতন রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে জানিয়ে মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, তারা অন্যান্য ভাতাও পাবেন। তারা এককালীন আউটফিট ভাতা পাবেন। বিধি মোতাবেক ভ্রমণ ভাতা পাবেন। দুটো উৎসব ভাতা পাবেন। নববর্ষ ভাতা, শ্রান্তি বিনোদন ভাতা পাবেন। এর বাইরেও তিন বাহিনীর প্রধানরা বিশেষ আবাসিক সুবিধা ও আবাসিকসংশ্লিষ্ট সুবিধা, সার্বক্ষণিক গাড়ি, সামরিক হাসপাতালে বিনা খরচে নিজে ও পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসা, রেশন, ভবিষ্যৎ তহবিল ও সহায়ক জনবল সুবিধা পাবেন। বাহিনীপ্রধান পদ থেকে অবসর নেওয়ার দিন থেকেই রিটায়ার্ড বলে গণ্য হবেন। বেসামরিক কর্মকর্তাদের মতো এক বছরের অবসরোত্তর ছুটি (পিআরএল) পাবেন।
মন্ত্রিপরিষদসচিব বলেন, কোনো অবসরপ্রাপ্ত বাহিনীপ্রধান অবসর নেওয়ার পর কোনো সামরিক বা অসামরিক পদে পুনঃনিয়োগ লাভে যোগ্য হবেন না। তবে চুক্তিভিত্তিতে কোনো অসামরিক পদে নিয়োগ পেতে পারবেন। প্রজাতন্ত্রের কোনো কর্মে সামরিক বা অসামরিক নিয়োগলাভে অযোগ্য হবেন। তবে অবসরপ্রাপ্ত তিন বাহিনীপ্রধানরা সাংবিধনিক পদগুলোতে নিয়োগের জন্য যোগ্য হবেন বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদসচিব।
Comments
comments