অনলাইন ডেস্ক: রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করার পাশাপাশি জরুরি পরিস্থিতিতে জনগণ ও দেশের কল্যাণে কাজ করার জন্য সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। আজ রাজশাহী ক্যান্টনমেন্টে বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টাল সেন্টারের (বিআইআরসি) পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি আপনারা সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা জরুরি পরিস্থিতিতে জনগণের কল্যাণে কাজ করবেন। জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করার পাশাপাশি দেশ গঠনেও আপনারা সক্রিয় ভূমিকা রাখবেন।’ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের (এএফডি) সর্বাধিনায়ক রাষ্ট্রপতি বলেন, সেনাবাহিনী একটি প্রতিষ্ঠান, যেখানে শৃংখলা ও পেশাগত দক্ষতার কোন বিকল্প নেই।
তিনি তার বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, একাত্তরে স্বাধীনতাযুদ্ধে যারা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন সেইসব বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ভাষা আন্দোলনের বীর সৈনিকদের অবদানের কথা স্মরণ করেন। ১৯৯৯ সালে নীতিগতভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্ট (বিআইআর) গঠনে অনুমোদন দেয়ায় এবং এই বাহিনী গঠনে যে সকল সেনাসদস্যের অবদান রয়েছে, তাদের কথাও রাষ্ট্রপতি স্মরণ করেন।
আধুনিক, সময়োপযোগী ও শক্তিশালী সেনাবাহিনী তৈরিতে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ‘ভিশন ২০২১’-এ বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ প্রস্তুত করেছে। রাষ্ট্রপতি হামিদ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন সেকশনে নতুন নতুন ইউনিট গঠন করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় আধুনিক সরঞ্জাম ক্রয় করে ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীকে আধুনিক ও সময়োপযোগী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।
সেনা সদস্যদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সৈনিকের জীবনে প্রশিক্ষণের কোন বিকল্প নেই। প্রশিক্ষণ মানুষকে শৃংখলার মধ্যে রাখে এবং পেশাগত জ্ঞান ও দায়িত্ববোধ বৃদ্ধি করে। প্রশিক্ষণ সেনা সদস্যদের একটি চলমান প্রক্রিয়া, যা দায়িত্ববোধ ও পেশাদার বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলে।’
১৯৭৫ সালের ১১ জানুয়ারি কুমিল্লা আর্মি একাডেমিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের কথা স্মরণ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু সেদিন সৈনিকদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ‘তোমরা অবশ্যই ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ করবে… … কিন্তু মনে রাখবে যে, কোন ভালো মানুষ যেন কোন ভুলের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।’ দেশ ও বিদেশে সেনাবাহিনীর বিভিন œ অবদানের প্রশংসা করে তিনি বলেন, আমাদের সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক কাজের মাধ্যমে বিশ্বসম্প্রদায়ের কাছে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।
সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের ভালো সেবা ও দায়িত্বশীল কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশের জনগণের সম্মান ও ভালবাসা অর্জন করেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। রাষ্ট্রপতি তার বক্তব্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা, অবকাঠামো নির্মাণ, আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও ভোটার তালিকা তৈরিসহ বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রম বাস্তবায়নে সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন।
এর আগে রাষ্ট্রপতি আর্টিলারি বাহিনীর বিশেষ দলের কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। তিনি সেখানে রক্ষিত পরিদর্শন বহিতেও স্বাক্ষর করেন। এর আগে ক্যান্টনমেন্টে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক রাষ্ট্রপতিকে অভ্যর্থনা জানান।
Comments
comments