অনলাইন ডেস্ক: মঙ্গল শোভাযাত্রায় নিরাপত্তা এবার আরও বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে পয়লা বৈশাখে নিরাপত্তার বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, মঙ্গল শোভাযাত্রায় নিরাপত্তা এবার আরও বাড়ানো হয়েছে। চারুকলা থেকে শুরু হওয়া এই শোভাযাত্রায় রাস্তা থেকে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। যারা শোভাযাত্রায় অংশ নিতে আগ্রহী তারা চারুকলায় যাবে। শুরু থেকেই থাকতে হবে। শোভাযাত্রার দুপাশে সোয়াট টিমের সদস্যরা, সামনে পুলিশ আর পেছনে পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা থাকবেন। পুরো রমনা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।
তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১১ হাজার পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি সাদাপোশাকে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। উৎসব উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও রমনা পার্ক এলাকা যানবাহনমুক্ত থাকবে। উত্তরের বাংলামোটর ক্রসিং; পশ্চিমে কাঁটাবন, নীলক্ষেত ও পলাশি ক্রসিং; দক্ষিণে বকশীবাজার, শহীদুল্লাহ হল, রোমানা চত্বর ও সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল ক্রসিং এবং পূর্বে জিরো পয়েন্ট ইউবিএল ও কাকরাইল চার্চ ক্রসিং এলাকা দিয়ে কোনো যানবাহন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রমনা পার্ক ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢুকতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, উৎসবে যাঁরা আসবেন, নিরাপত্তার জন্য তাঁরা ছুরি, কাঁচি, ভ্যানিটি ব্যাগ, পোঁটলা-জাতীয় ব্যাগ, দেশলাই, লাইটার সঙ্গে নিয়ে আসতে পারবেন না। এই এলাকায় যাতে কোনো ছিনতাই ও নারীদের উত্ত্যক্ত (ইভ টিজিং) করার মতো ঘটনা না ঘটে, এ জন্য আমাদের ইউনিফর্ম পরা পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশ থাকবে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা থাকবে। পুরো এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। শোভাযাত্রা যে এলাকায় হবে সেই রুটেও সিসি ক্যামেরা থাকবে।
আছাদুজ্জামান বলেন, মঙ্গল শোভাযাত্রায় কোনও মুখোশ মুখে পরা যাবে না। তবে হাতে নেওয়া যাবে। রমনা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কোনও হকার ঢুকতে দেওয়া হবে না। তবে সোহরাওয়ার্দীতে হকার থাকবে। এছাড়া রাজধানীর অন্যান্য এলাকার মেলাতে হকার থাকবে। ছিনতাই, ইভটিজিং রোধে আলাদা টিম থাকবে। আমরা ২০১৫ সালের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে কাজ করছি। তাই গতবছর পহেলা বৈশাখে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এবারও ঘটবে না। কারণ মূল সমস্যাটা হতো প্রবেশমুখে, সেটা আমরা আলাদা করে দিয়েছি, এখন সমস্যা হবে না।
তিনি বলেন, পয়লা বৈশাখে ঢাকা মহানগরে বিকেল পাঁচটার পরে কোনো উন্মুক্তস্থানে সমাবেশ করা যাবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত সমাবেশ চলবে। ইনডোরে ও যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে বিকেল পাঁচটার পর সমাবেশ করা যাবে। রমনা পার্ক ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢোকার ও বের হওয়ার পৃথক প্রবেশপথ থাকবে। প্রতি প্রবেশপথে আর্চওয়ে থাকবে। সবার দেহ তল্লাশি করে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হবে। গোটা উৎসবে ভুভুজেলা নিষিদ্ধ থাকবে। পুলিশের পক্ষ থেকে উৎসবে আগত ব্যক্তিদের ফুল, পানি ও বাতাসা বিতরণ করা হবে। সন্ধ্যা ছয়টার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বহিরাগত ব্যক্তিদের ঢুকতে দেওয়া হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় স্টিকার ছাড়া কোনো গাড়ি ওই এলাকায় ঢুকতে পারবে না।
ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, পহেলা বৈশাখে মটরসাইকেলে এক জনের বেশি যাত্রী উঠতে পারবে না। কিন্তু স্ত্রী ও নাবালক সন্তানদের ক্ষেত্রে আমর ছাড় দিবো। তবে কোনো মতেই পুরুষ যাত্রী মটরসাইকেলের পিছনে উঠানো যাবে না। পহেলা বৈশাখের দিন নগরীর ২৬ পয়েন্টে রোড ড্রাইভারশন থাকবে।
Comments
comments