অনলাইন ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যে সম্পর্ক রয়েছে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জীর স্ত্রী শুভ্রা মুখার্জী সেই সম্পর্ককে আরো দৃঢ় করে রেখে গেছেন। তিনি বলেন, শুভ্রা মুখার্জী ছিলেন উভয় দেশ তথা দুই বাংলার অধিবাসী। তিনি দুই বাংলা ও মানুষকে ভালবাসতেন। তাই তিনি দীর্ঘদিন পরেও তার নিজের জন্ম ভূমিতে বেড়াতে এসেছিলেন। শুভ্রা মুখার্জী জীবিত থাকা অবস্থায় প্রতিদিনই বাংলাদেশের কথা বিশেষ করে তার জন্মস্থান নড়াইলের খোঁজ খবর রাখার চেষ্টা করতেন।
মশিউর রহমান আজ নড়াইলের মেয়ে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জীর স্ত্রী শুভ্রা মুখার্জীর প্রথম প্রয়ান দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। বিকেলে সদর উপজেলার তুলারামপুর গ্রামে শুভ্রা মুখার্জীর ইচ্ছায় নির্মিত শ্রী শ্রী গোপাল মন্দির ও কালী মন্দির প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন শুভ্রা মুখার্জী ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মৎস্য সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। বক্তব্য রাখেন শুভ্রা মুখার্জী ফাউন্ডেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক কার্ত্তিক ঘোষ ও পরিচালক অয়ন রঞ্জন দাস । মশিউর রহমান বলেন, শুভ্রা মুখার্জী বাংলাদেশের মানুষের প্রকৃত বন্ধু ছিলেন। তিনি আজ নাই। তার কাজের মাধ্যমে দু’দেশের মানুষের মাঝে দূরত্ব কমে আসবে এবং দু’দেশের বন্ধুত্বকে আরো সুদৃঢ় করবে।
শুভ্রা মুখার্জীর রেখে যাওয়া স্মৃতিগুলো যাতে হারিয়ে না যায় সে জন্য স্থানীয়ভাবেই বেশি উদ্যোগ নেয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকেও এব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।
হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বক্তৃতাকালে শুভ্রা মুখার্জীর মৃত্যু বার্ষিকীতে আসা সকলকে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান এবং শুভ্রা মুখার্জী ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাদের নিকট ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জীর দেয়া ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেন।
মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে শুভ্রা মুখার্জী ফাউন্ডেশনের আয়োজনে দুই দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল নাম সংকীর্তন, গীতাপাঠ, গীতাদান, অন্নদান, বস্ত্রদান। ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির স্ত্রী শুভ্রা মুখার্জির ১৯৪৭ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর নড়াইল সদর উপজেলার চিত্রা পাড়ের ভদ্রবিলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম অমরেন্দ্রনাথ ঘোষ, মা মীরা রানী ঘোষ। তিনি শৈশবকালে তুলারামপুর গ্রামে মামাবাড়ি থেকে চাচড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃত্বীয় শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেন এবং ১৯৫৫ সালে ভারতে চলে যান।
প্রায় ১২ বছর পর্যন্তু তিনি নড়াইলে থাকার পর পরিবারের সকলেই ভারতে চলে যান। সেখানে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের সময় তার বয়স ছিল ১৪, আর প্রণবের ২২। নাড়ির টানে ১৯৯৫ সালে মেয়ে শর্মিষ্ঠাকে নিয়ে শুভ্রা বেড়াতে এসেছিলেন নড়াইলে। ২০১৩ সালের ৫ মার্চ ভারতের রাষ্ট্রপতি তিনদিনের সফরে বাংলাদেশে এসে স্ত্রী শুভ্রা মুখার্জীকে নিয়ে নড়াইলের ভদ্রবিলা গ্রামে বেড়াতে আসেন। শুভ্র মুখাজী গত বছরের (২০১৫) ১৮ আগস্ট ভারতের আর্মি হসপিটালে (রিসার্চ অ্যান্ড রেফারেল) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
Comments
comments