Download Free BIGtheme.net
Home / জেলার খবর / নাসিরনগরে শিকলে বাধা এইচ এস সি পরীক্ষার্থীর জীবন

নাসিরনগরে শিকলে বাধা এইচ এস সি পরীক্ষার্থীর জীবন

মোঃ আব্দুল হান্নান, নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া): এইচ, এস, সি পরীক্ষার্থী শেখ মুবিনা এখন শিকলে বন্দি। চৈত্রের কাঠ রুদ্রের দুপুরে একটি টিনশেঠ ঘরে প্রায় ৩ মাস ধরে শিকলে বন্দি জীবন কাটাচ্ছে মেধাবী কলেজ ছাত্রী মুবিনা। প্রচন্ড গরম, রোদ, বৃষ্টি ঝড় তুফানের মধ্যেই রাতদিন মানবেতর জীবন যাপন করছে এ তরুণী। উপজেলা সদর ইউনিয়ন ফুলপুর গ্রামের দিনমজুর শেখ তাজুল ইসলামের মেয়ে মুবিনা নাসিরনগর ডিগ্রী মহা বিদ্যালয়য়ের এইচ,এস,সি পরীক্ষার্থী। সোমবার রুবিনাদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় শিকলে বাধা অবস্থায় খুটিতে বসে আছে মুবিনা। তার টেস্ট পরীক্ষার আগে রাত জেগে পড়াই কাল হয়ে দাড়ায় বলে মন্তব্য করেন তার মা মহিলন বেগম। সে বই পড়তে পড়তে একসময় ঘুমিয়ে পড়ত। পরীক্ষার কিছুদিন পূর্বে তার মধ্যে কিছু পরিবর্তন দেখা দেয়। ঘুমন্ত অবস্থায় চেঁচামেচি, কলেজ সহপাঠীদের ডাকাডাকি, চিৎকার দিয়ে ঘুম থেকে জেগে ওঠা ইত্যাদি। ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর, ছোটভাই বোন এমনকি মা বাবাকে মারপিট করা তার নিত্য খেলা।

সাতসকালে এ প্রতিবেদনকারীকে দেখে সে বলতে থাকে আংকেল ওরা আমায় বেধে রেখেছে। আমার শিকল খুলে দিন, আমি কলেজে যাব। কিন্তু বিধিবাম, সে যে এখন বড্ড পাগল। শিকল ছাড়লেই সে লংকা কান্ড ঘটায় যা পরিবার সহ পাড়াপড়শি সবার আতংকের বিষয়। অসহায় পিতা বাধ্য হয়ে তাকে শিকলবন্দী করে রাখে। স্থানীয় ডাক্তার, কবিরাজ, ঝাড়ফুঁক কোন কিছুই বাকি রাখেনি। কিন্তু মুবিনা ভাল হয়ে ওঠেনি। অসহায় পিতা লাজলজ্জার মাথা খেয়ে স্থানীয় স্কুল কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে হাত বাড়ায়। এতে তার প্রাইভেট শিক্ষক লিটন স্যার, স্কুলশিক্ষক আলমগির স্যার, পাইলট স্কুল প্রধান রহিম স্যার ও কলেজসহ ফান্দাউক পন্ডিতরাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমানের চিকিৎসা সহায়তা প্রদানে সে এখন ব্রাহ্মানবাড়িয়া তিতাস জেনারেল হাসপাতালের মানসিক চিকিৎসক ফারুক আলমের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। সহায় সম্বলহীন পিতা সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেন। মুবিনার মা আক্ষেপ করে বলেন আমার মেয়ে উন্নত চিকিৎসা পেলে সুস্থ হয়ে ওঠত।

স্থানীয় সদস্য খাইরুল মেম্বার জানান তার পক্ষে যতটা সম্ভব তাকে চিকিৎসা সহায়তা করবে। হাজী বাছির মিয়া ও সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন। এ ব্যাপারে নাসিরনগর মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আলমগির হোসেনের সাথে কোনো যোগাযোগ করলে রং নাম্বার বলে কেটে দেন। ৯ এপ্রিল কলেজে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। কথা হয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ লিয়াকত আলীর সাথে। তিনি সহযোগিতার সহিত বলেন শিক্ষার্থীর উন্নততর চিকিৎসার প্রয়োজন। তার চিকিৎসা অব্যাহত রাখলে উপজেলা প্রসাশনের পক্ষে প্রয়োজনীয় সহায়তা করব।

Comments

comments